‘যদি একটা নৌকা থাকত, অনেক সমস্যা মিটে যেত’

2 hours ago 1
আত্রাই নদীর বুক চিরে ভেসে আছে ছোট্ট এক টুকরো জমি- নাম মাঝিয়ালির চর। চারপাশে ঢেউয়ের কলতান, আর মাঝখানে ২০ একরের সবুজ জমি। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটা কাঁচা-টিনের ঘর, যেখানে ১৩টি পরিবার গড়ে তুলেছে তাদের ছোট্ট গ্রাম। এই চর উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের বাসুলী এলাকায় অবস্থিত। বর্ষা না এলে এই চরের জীবন শান্ত। সকালে মাঠে কাজ, বিকেলে গরু-ছাগল চরানো, আর সন্ধ্যায় নদীর ধারে বসে গল্প। কিন্তু বর্ষা এলে বদলে যায় সবকিছু। নদীর পানি ফুলে-ফেঁপে ওঠে, আর চর হয়ে যায় একেবারে দ্বীপ। তখন চারপাশের পৃথিবী থেকে যেন আলাদা হয়ে যায় তারা। নদীর বুকের এই চরের মানুষগুলো প্রতিদিন নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচে। বর্ষার জলরাশিতে বন্দি হয়ে থাকলেও তাদের চোখে এখনো একটুখানি আশার আলো—যেদিন নিজের নৌকা থাকবে, সেদিন হয়তো এই বন্দিত্ব ভাঙবে। সত্তরোর্ধ্ব আব্দুল লতিফ বসে আছেন নিজের উঠানে, দূরে নদীর দিকে তাকিয়ে বলেন- ‘৭১ সালের যুদ্ধের পর এখানে এসেছি। বর্ষায় পানি বাড়লে আমরা বন্দি হয়ে যাই। অসুস্থ হলে বা দরকারে বাইরে যেতে অন্যের নৌকা ভাড়া করতে হয়। অনেক সময় নৌকা মেলে না, তখন ভোগান্তি বাড়ে।’ চরের তরুণ সোহেল ইসলাম যোগ করলেন, ‘বর্ষায় বাজার, স্কুল- সবকিছুই কষ্টকর হয়ে পড়ে। কেউ অসুস্থ হলে সবচেয়ে চিন্তা হয়। যদি নিজের একটা নৌকা থাকত, অনেক সমস্যা মিটে যেত।’ আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, আগে একটি নৌকা দেওয়া হলেও তা এখন ভেঙে গেছে। নতুন নৌকা বানানোর কাজ চলছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সরকার কালবেলাকে বলেন, ‘মাঝিয়ালির চর যেন বর্ষায় বিচ্ছিন্ন না হয়, সেই ব্যবস্থা দ্রুত নেওয়া হচ্ছে।’  
Read Entire Article