যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ কর্মী ভিসার (এইচ-১বি) ওপর যে ১ লাখ ডলার ফি ধার্য করা হয়েছে, তা রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হচ্ছে। প্রতিটি আবেদনপত্রের সঙ্গে এটি আরোপ করা হবে। তবে যারা আগে থেকেই বৈধ ভিসাধারী, তাদের বেলায় এই ফি প্রযোজ্য নয়।
শনিবার এইচ-১বি ভিসা নিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গতকাল এক পোস্টে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, এটা বার্ষিক ফি নয়, বরং এককালীন; যা শুধু ভিসার আবেদনপত্রের বেলায় প্রযোজ্য।
মুখপাত্র আরও বলেন, এইচ-১বি ভিসাধারী যারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আছেন, তাদের দেশটিতে আবার প্রবেশ করতে এই ১ লাখ ডলার ফি দিতে হবে না।
এর আগে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছিলেন, এই ফি বার্ষিক হিসাবে দিতে হবে। যদিও তখন তিনি ভিসা ফির শর্তগুলো ‘এখনো বিবেচনাধীন’ বলে জানান।
ভিসা ফি আরোপ করা নিয়ে শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসনের ওই ঘোষণার পর মাইক্রোসফট, জে পি মরগান, অ্যামাজনসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ ই-মেইলে তাদের এইচ-১বি ভিসাধারী কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন কয়েকটি ই-মেইল পর্যালোচনা করে দেখেছে।
গোল্ডম্যান স্যাকসের একটা অভ্যন্তরীণ নোট রয়টার্সের হাতে এসেছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দেওয়া ওই নোটে কর্মীদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, এ ধরনের ভিসাধারীরা যেন আন্তর্জাতিক ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করেন।
তবে এক্স পোস্টে লেভিট বলেন, এইচ-১বি ভিসাধারীরা আগে যেমন স্বাভাবিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ ও সে দেশে আবার প্রবেশ করতেন, এখনো সেভাবেই পারবেন।
নতুন ফি শুধু পরবর্তী এইচ-১বি ভিসার আবেদনের লটারি পর্বের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। বর্তমান ভিসাধারী বা ভিসা নবায়নের বেলায় এ ফি প্রযোজ্য নয়।
হোয়াইট হাউজ বলেছে, এই ফি আরোপ করা হচ্ছে মার্কিন কর্মীদের জন্য সমান প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে। তাদের মতে, মার্কিন কর্মীদের জায়গায় ‘কম মজুরি দিয়ে বিদেশি শ্রমিক’ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ভারতের আইটি শিল্প সংগঠন ন্যাসকম গতকাল সকালে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার রাতে নির্বাহী আদেশে এইচ-১বি ভিসার আবেদনের ওপর যে নতুন ফি আরোপ করেছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ পেশাজীবী পাঠানো ভারতীয় প্রযুক্তি সেবাদানকারী কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে।
এদিকে গতকাল বিতরণ করা নোটে হোয়াইট হাউস বলেছে, নতুন আবেদনের জন্য এক লাখ ডলার ফি ধার্য করা হলেও জাতীয় স্বার্থে ক্ষেত্রবিশেষে এই ফি ছাড়াই এইচ-১বি ভিসার আবেদন গ্রহণ করা হবে।
নোটে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসাধারী আইটি কর্মীদের উপস্থিতি ২০০৩ অর্থবছরে ৩২ শতাংশ থেকে গত কয়েক বছরে বেড়ে ৬৫ শতাংশ হয়েছে।
হোয়াইট হাউজ থেকে শ্রম ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরকে এ ভিসাসংক্রান্ত বিষয় যাচাই, বিধিমালা কার্যকর করা, নিরীক্ষা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে যৌথ নির্দেশিকা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া শ্রমমন্ত্রীকে ‘এইচ-১বি প্রকল্পে প্রস্তাবিত মজুরি স্তর পুনর্বিবেচনা’ ও ‘উচ্চ দক্ষ, উচ্চ মজুরির এইচ-১বি কর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার’ জন্য বিধি প্রণয়নের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ