ড. ফোরকান আলী
আজ আন্তর্জাতিক যুব দিবস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন জিও-এনজিও এবং বিভিন্ন সংগঠন অনাড়ম্বর ভাবে অনুষ্ঠানটি পালন করে। কিন্তু এ পর্যন্তই। এরপর যুবকদের ব্যাপারে আর কারো কোনো পরিকল্পনা থাকে না। অথচ সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিপুল সংখ্যক যুবক থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিরাট সুযোগ। অনেক দেশেরই অনেক দক্ষ শ্রমিক আছে। আবার অনেক দেশ দক্ষ শ্রমিকের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। যুব সম্প্রদায় যাতে ভালো কাজ খুঁজে নিতে পারে, সে রকম প্রস্তুতি নিয়ে তাদের গড়ে তুলতে হবে।
বিশ্ব ব্যাংক জানায়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রায় ১৩ কোটি যুবকই লিখতে-পড়তে পারেন না। নাগরিক দায়িত্ব পালনের জন্য এসব যুবককে সুশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপারে শিক্ষাদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। শুধু সমাজকে সুন্দর করার জন্যই নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর দারিদ্র্য বিমোচন এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতেও যুব সমাজকে কাজে লাগাতে এ রিপোর্টে আহ্বান জানানো হয়েছে। বর্তমান পৃথিবীতে বেকারের সংখ্যা ৮৮ কোটি ২০ লাখ। এ বেকারের অধিকাংশই যুবক এবং উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক। আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক গবেষণা সমীক্ষায় এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
আইএলওর অপর একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, পৃথিবীতে সর্বমোট কর্মক্ষম লোকের শতকরা ২৫ ভাগ যুবক। আর ১৫ থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত বয়সসীমার কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা শতকরা ৪৭ ভাগ। এরা বর্তমানে সবাই বেকার। এই সমীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ৫৫ কোটি গরিব কর্মজীবী লোকের মধ্যে ১৩ কোটি যুবক ও যুব মহিলা। যাদের দৈনিক আয় ১ আমেরিকান ডলার বা তার সমান। এসব গরিব যুবক ও যুব মহিলারা তাদের এবং পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য দারিদ্র্যসীমার নিচে অত্যন্ত করুণ অবস্থায় জীবন সংগ্রামে লিপ্ত।
বাংলাদেশের লোকসংখ্যা বর্তমানে ১৭ কোটি প্রায়। ইউএনএফপির মতে, এ সংখ্যা ১৮ কোটি। ১৭ বা ১৮ কোটি যা-ই হোক, এর মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ হচ্ছে যুবক। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ এবং লোকের গড় আয়ু ৬১ বছর। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের মতে, ২০৫০ সালে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২৫ কোটি ২৬ লাখ। শতকরা দুই হারে (দু’বছরে) বৃদ্ধি পেয়ে দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ৩০ লাখ যুবক। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশে যুবকদের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে; তেমনই বৃদ্ধি পাচ্ছে বেকারদের সংখ্যা। বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা কত, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে অনেকের মতে, এ সংখ্যা হবে ৩ কোটি।
বেকারত্ব নিরসনে ভারতের মত তিন থেকে চার মাসের জন্য ‘কর্মসংস্থান গ্যারান্টি প্রকল্প’ চালু করা যেতে পারে। সমাজে সবার জন্য সুযোগের গণতন্ত্রায়ন ঘটাতে হবে। যেখানে সবার জন্য থাকবে ঋণ পাওয়ার ও সম্পদ গড়ার সুবিধা। উপযুক্ত মজুরিসহ কর্মসংস্থান, সুশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা। গত এক দশকে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী যুবক বেকারের সংখ্যা দ্রুত হারে বেড়ে গেছে। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যুবক বেকার রয়েছে। তারা চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক রিপোর্টে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
আইএলও ‘গ্লোবাল এমপ্লয়মেন্ট ট্রেডস ফর ইয়ুথ’ শীর্ষক এক রিপোর্টে সতর্ক করে দিয়েছে, বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যুবকদের ভীষণভাবে ব্যর্থ করে দিচ্ছে। এতে বলা হয়, এ সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪০ কোটি নতুন ও ভালো চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। অন্যথায় এ সমস্যা সমাধান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। দেশের মোট বেকার যুব জনশক্তির সিংহভাগের বসবাস গ্রামাঞ্চলে। প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী বেকারদের ৬৯.৫ শতাংশ বাস করে পল্লি এলাকায়। বাকি ৩০.৫ শতাংশ শহরের অধিবাসী। গ্রাম এবং শহর উভয় ক্ষেত্রে বেকারদের মধ্য যেমন রয়েছে স্বল্পশিক্ষিত, তেমনই আছে উচ্চ ডিগ্রিধারী। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সারাবছর দেশে চাকরির যে ক্ষেত্র সৃষ্টি হয় বা পদ খালি হয়, তার চেয়ে প্রার্থীর সংখ্যা বহুগুণে বেশি। কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং কর্মপ্রার্থী; এ দুয়ের মধ্যকার ব্যবধান দিন দিন বেড়ে চলেছে।
প্রকৃতপক্ষে বেকার সমস্যা মোকাবিলায় কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী এবং বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংকল্প এবং দৃষ্টিভঙ্গির স্বচ্ছতারও প্রয়োজন। বেকারত্ব নিরসনে দেশে এমন একটি অর্থনৈতিক অবস্থা সৃষ্টি করা দরকার। যাতে উৎপাদনশীল খাতে, ক্ষুদ্র মাঝারি এবং বৃহৎ বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। শিল্প-কারখানা বৃদ্ধির ফলে কাজের সুযোগ বাড়বে।শিল্পে বিনিয়োগে যেসব অন্তরায় ও সীমাবদ্ধতা আছে, সেসব ক্ষেত্রে নীতি নিয়মের সংস্কার করা প্রয়োজন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কর্মমুখী শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। নানা ধরনের প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে ওঠে। আমাদের দেশে এমন প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে যারা প্রাতিষ্ঠানিক সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতায় ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে কাজের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, পরামর্শ এবং সহায়তার মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধানে ফলপ্রসূ উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব।
বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক প্রকাশনা ‘ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট’-এ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে যুব সমাজকে তৈরি করার জন্য আরও বিনিয়োগ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবারের রিপোর্টের মূল বিষয় ছিল যুব সমাজ। বিশ্বে আজ সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে মানব সম্পদ। সাড়ে ১৭ বা ১৮ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশকেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা যাবে। যদি জনসংখ্যাকে জনশক্তিকে পরিণত করা যায়। বেকার নামে খ্যাত তিন কোটিরও বেশি যুবকই হতে পারেন আমাদের অগ্রগতি আর সমৃদ্ধির হাতিয়ার। বিশ্বে এখন আলোচিত বিষয় যুবক সম্প্রদায়ের অফুরন্ত সম্ভাবনা। বিশ্বজুড়ে বেকার সমস্যা কম-বেশি বিদ্যমান। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কর্মহীনতার সমস্যা বাড়ছে। বাড়ছে বেকারের সংখ্যা।
এক হিসাবে জানা যায়, বাংলাদেশে বর্তমানে ১৫ বছরের বেশি বয়সী যুবকের সংখ্যা আট কেটি আট লাখ ৪৩ হাজার। তাদের মধ্যে চার কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার তরুণ কম-বেশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের অনেকেরই আয় দৈনিক ৫-৬শ’ টাকারও কম। একে পুরোপুরি বেকার বলা যায় না। আর পুরোপুরি বেকারের সংখ্যা সরল হিসাবে তিন কোটি ২৮ লাখ ২৩ হাজার। বিশ্বে ২৫ বছরের নিচে যুবকের সংখ্যা প্রায় ৩শ’ কোটি। অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি এ যুব সমাজকে অশিক্ষা, বেকারত্ব আর দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যেতে হয়। অথচ বিশ্বের সর্বত্র জনসংখ্যার সবচেয়ে সম্ভাবনাময়, প্রতিশ্রুতিশীল এবং উৎপাদনমুখী অংশ হচ্ছে সে দেশের যুব সমাজ।
বর্তমান বিশ্বে যুব সমাজ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছেন। অভাব-অনটনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বেকারত্ব, মাদকাসক্তি, সন্ত্রাস আর এইডসের মতো ভয়ংকর বিপদ। অথচ পৃথিবীর কাল পরিক্রমায় যুব সম্প্রদায়ই এনেছে পরিবর্তনের নতুন ধারা। সময়ের স্রোতধারায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সেতুবন্ধন রচনা করেছেন যুবকরাই। তাই বিশিষ্টজনরা যুবকদের মাঝেই খুঁজে পেয়েছেন অমিত সম্ভাবনার পথ। রাষ্ট্রের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে যুব সম্প্রদায়কে সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসাবে কাজে লাগানোর তাগিদ করেছেন বোদ্ধামহল। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের তথ্য রিপোর্টে বাংলাদেশের বিপুল যুব সম্প্রদায়কে অফুরন্ত সম্ভাবনার উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের এবারের রিপোর্টের মূল প্রতিপাদ্য ছিল যুব সমাজ। তাদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়া এখন বিশ্বের সবচেয়ে যুববহুল সমাজ। এখানে বর্তমানে ১২-২৪ বছর বয়সী যুবকের সংখ্যা ৩৮ কোটি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ৪৩ কোটিতে। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে এখানে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ হয় না। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই মধ্য বয়সীদের তুলনায় যুবকরা বেশি বেকার। বাংলাদেশের মধ্যবয়সী লোকদের মধ্যে বেকারত্ব এক শতাংশ পক্ষান্তরে যুব সম্প্রদায়ের বেকারত্ব পাচ শতাংশ। যুব সমাজের এ উচ্চ বেকারত্ব বিনিয়োগের পরিবেশ ধ্বংসকারী এবং সামাজিক অস্থিরতার জন্যও দায়ী। তারুণ্যের জোয়ারে উদ্ভাসিত যুব সমাজকে সুসংগঠিতকরণের মাধ্যমে আত্মপ্রত্যয়ী যুবশক্তি গঠনে তৎপর হতে হবে আমাদের।
যুবকরাই পাল্টে দেবে সনাতন ধারণা। যুবকদের শক্তিতে অর্থনৈতিক মুক্তি। যুবকদের মেধা, মনন আর কর্মশৈলীতে গড়ে উঠবে স্বনির্ভর বাংলাদেশ। বেকারত্ব দেশের জাতীয় সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা। দেশে চলমান কর্মসংস্থান সংকট, ঘুস, দুর্নীতি, নিয়োগে অনিয়ম, মেধার অবমূল্যায়ন, আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক স্বজনপ্রীতির কারণে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে বেকার সমস্যা। অপরদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়ার কারণে শিক্ষিত যুব সমাজে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। ফলে নিম্নগামী হচ্ছে সম্ভাবনাময় যুব সমাজ। অথচ যুব সম্প্রদায় দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। রিপোর্টে সতর্ক করে বলা হয়েছে, যুব সম্প্রদায়কে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করা না গেলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। চাকরির বাজারে আসা বিপুল সংখ্যক যুবক শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে চাকরির সংস্থান দিতে হলে গ্রামীণ এলাকায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট জনশক্তির কমপক্ষে ২০ শতাংশ অল্প দক্ষ, যথার্থভাবে শিক্ষিত নয়। সে হিসাবে ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কাজের জন্য উপযুক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন লোক পায় না। আর দক্ষ জনবল না পাওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, যেসব উন্নয়নশীল দেশ ১২-২৪ বছর বয়সী যুব সম্প্রদায়ের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং চাকরির প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণ ব্যয় করছে; তারা উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে এবং দ্রুত হারে দারিদ্র্য কমাতে সক্ষম হবে। কাজেই যুব সম্প্রদায়ের পেছনে বিনিয়োগের এখনই যথার্থ সময়।
দেশে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশই যুবক। আবার এদের মধ্যে ৮৬ শতাংশই বেকার। অথচ সুসংগঠিত যুব সমাজই গড়তে পারে একটি সমৃদ্ধ দেশ। তাই যুব শক্তিকে কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুব সম্পদে পরিণত করাই আমাদের দায়িত্ব হওয়া উচিত। নেতৃত্বে বিকাশ, মানবীয় গুণাবলি অর্জন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ দূষণ রোধ, শিল্পভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণ প্রক্রিয়ায় যুবকদের অংশগ্রহণ, দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতায়ন প্রভৃতি অর্জনে যুব সমাজকে নিয়ে কাজ করছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান। যুব সমাজ উন্নয়নের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চাবিকাঠি। এমন প্রেক্ষাপটে যে পথে যুব সমাজের দক্ষতা ও চ্যালেঞ্জ পরিচালনা করা হবে; তারই প্রভাব পড়বে বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর। প্রভাব পড়বে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনযাপন ও কল্যাণের ওপর।
সমাজের শক্তি, উপকারভোগী এবং সামাজিক পরিবর্তনের শিকার সিংহভাগই যুব সমাজ। তারা প্রতিনিয়ত ভাগ্য দ্বারাও পরিচালিত। যুব সমাজকে পরিকল্পিতভাবে সুসংগঠিত করে সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, তাদের সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে হবে। বিপুলসংখ্যক এই বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য জাতিসংঘ বা উন্নত বিশ্বের কোনো মাথা ব্যথা নেই। উন্নয়নশীল দেশসমূহে এ ক্ষেত্রে মাস্টার প্লান তৈরি করা জরুরি মনে করেন বিশেষজ্ঞ মহল। এ ছাড়া মাস্টার প্লানের জন্য মোট বাজেটের কমপক্ষে শতকরা ২০ থেকে ৩০ ভাগ ব্যয় বরাদ্দ রাখা উচিত বলেও তারা মনে করেন। আমরা আশা করি বেকার যুবদের হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করতে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
লেখক: গবেষক ও সাবেক অধ্যক্ষ।
এসইউ/জেআইএম