কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যুবলীগ নেতা হারুন রশিদের ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ফারহানা ইয়াসমিন নামের এক গৃহবধূ। তার সঙ্গে অঝোরে কাঁদলেন সন্তান সেগুফতা ইসলাম তুলি (১৫) ও আশরাফুল ইসলাম তোহা (১০)।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা হারুন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর শ্রীপুর এলাকার মৃত শাহজাহান মজুমদারের ছেলে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) উপজেলার স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি বিধবা রৌশন আরা বেগমের পক্ষে তার দেবরের স্ত্রী গৃহবধূ ফারহানা ইয়াসমিন লিখিত বক্তব্য বলেন, মনে করেছিলাম ৫ আগস্টের পর এদেশ থেকে আওয়ামী সকল দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। কিন্তু দেখা গেলো তার উল্টো চিত্র। স্থানীয় যুবলীগ নেতা হারুন রশিদের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ তদের ভূমি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। ক্ষমতায় থাকাকালীন যুবলীগ নেতা হারুন একাধিকবার তাদের পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে নির্যাতন করেছেন। তখনও এর প্রতিকার তারা কোথাও পাননি। পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ২ ডিসেম্বর যুবলীগ নেতা হারুনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাদের বাড়িঘর, ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন।
গৃহবধূ ফারহানা আরও বলেন, যুবলীগ নেতা হারুন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা আমার পরনের কাপড় নিয়ে টানাহেঁচড়াসহ শ্লীলতাহানী ও শারীরিক নির্যাতনের চেষ্টা করে। হাতে অস্ত্র নিয়ে বারবার আমাদের দিকে ধেয়ে আসে। তারা আমার দুই সন্তান সেগুফতা ইসলাম তুলি ও আশরাফুল ইসলাম, বড় জা রৌশন আরা বেগমকে ঘরের ভেতরে রেখে তালা মেরে দেয়। তাৎক্ষণিক আমরা জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করলে থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘর থেকে বের করে।
তিনি আরও বলেন, এতেও যুবলীগ নেতা হারুন রশিদ ক্ষ্যান্ত না হয়ে আমার দুই সন্তানকে স্কুলে যেতে ও বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বাধা প্রদান এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। বিষয়টি আমি চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তার সহযোগিতায় আমার সন্তানরা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। আমরা হারুনের অত্যাচারে গত ২ ডিসেম্বর থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেছি। আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অভিযোগ দেওয়ায় তারা আরও বেশি ক্ষীপ্ত হয়। তার বাহিনীর ভয়ে পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা হারুন রশিদকে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.টি.এম আক্তার উজ জামান বলেন, গৃহবধূর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ৪ বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগীর পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদান করেছে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/জেআইএম