সবার জানা, নাজমুল হোসেন শান্ত এক সময় মানে চারমাস আগেও টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন। তারপর শ্রীলঙ্কা সফরের আগে তাকে হুট করে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। প্রতীকি প্রতিবাদ হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্তও শোধ তুলে নেন। সেই শ্রীলঙ্কা সফরে শেষ টেস্ট চলাকালীন জানিয়ে দেন আমি আর টেস্টে অধিনায়কত্ব করবো না। যেমন কথা তেমন কাজ।
কিন্তু একটা নাটকীয় ব্যাপার কিন্তু আছে; অবশেষে ৪ মাস পর আবার টেস্ট ক্যাপ্টেন হয়ে ফিরলেন শান্ত। মজার খবর হলো, এই ৪ মাস বিরতিতে বাংলাদেশের কোন টেস্ট ছিল না। তাই টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি ছেড়েও অধিনায়ক শান্ত কোন টেস্ট ম্যাচ মিস করেননি। সিলেটে কাল ১১ নভেম্বর থেকে আয়ারল্যান্ডের সাথে যে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে, তাতে আবার টেস্ট অধিনায়ক হয়েই ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
কিন্তু হঠাৎ কি এমন হলো যে শান্ত আবার বাংলাদেশ দলের টেস্ট অধিনায়ক হলেন? ওয়ানডে ক্যাপ্টেন্সি হাতছাড়া হওংয়ার পর মনের দুঃখে ও ক্ষোভে যে টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি ছেড়েছিলেন, কেনইবা আবার সে পদে ফেরা? বিসিবিই বা তাকে টেস্ট ক্যাপ্টেন হিসেবে পেতে চাইলো?
নাজমুল হোসেন শান্তর মুখ থেকেই শোনা যাক সে কথা। আজ সোমবার দুপুরে সিলেট স্টেডিয়ামের কনফারেন্স হলে বসে আবার টেস্ট অধিনায়ক হওয়া শান্তই শুনিয়েছেন নতুন করে তার নেতৃত্বে ফেরার গল্প।
শান্তর কথার সারমর্ম হলো, বিসিবির সাথে তার কথা হয়েছে। সেটা ছিল খুবই অন্তরঙ্গ আলাপ। পাশাপাশি সাদা বলের দুই অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও লিটন দাসের সাথেও আলোচনা। হয়েছে। বিসিবি থেকে তাকে যা জানানো হয়েছে, বোঝানো হয়েছে, সে কথোপকথনে শান্ত সন্তুষ্ট। তাই আবার টেস্ট অধিনায়ক হয়ে ফেরা।
এ ব্যাপারে শান্তর ব্যাখ্যা হলো, ‘মাঝখানে ক্যাপ্টেন ছিলাম না। ওই সময়টা রিল্যাক্স ছিলাম, এনজয় করেছি পুরা সময়টা। আর ভালো সময় কেটেছে। আর রিজনটা এর আগেও বলেছিলাম। বাট আমার কাছে মনে হয়েছে যে ক্রিকেট বোর্ড যেভাবে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে, তারপরে সবার সাথে সুন্দর একটা হেলদি কনভারসেশন হয়েছে। পাশাপাশি একটা সময় যে আমার মনে হয়েছে যে আমি নাজমুল হোসেন শান্ত, আমার ব্যক্তি থেকে বাংলাদেশ টিমটা অনেক বড় এবং আমার চিন্তা থেকে বড় চিন্তা হলো যে আসলে বাংলাদেশ টিমের কি প্রয়োজন। যেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বোর্ডের এত বড় বড় কর্মকর্তা বা এক্স ক্রিকেটাররা যারা বোর্ডে আছে, তারা যখন একটা পরামর্শ দিচ্ছেন, অবশ্যই এটা টিমের ভালোর জন্য, আমার নিজের ভালোর জন্য। সো ওই কনভারসেশনটাকে আমি পুরোপুরি রেস্পেক্ট দিয়েছি। যদি এক কথায় বলি যে আমার কাছে মনে হয়েছে আমি নাজমুল হোসেন শান্ত থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলটা আগে রাখা উচিত। সো আমি দলটাকে আগে রেখে আমি আবার এই ডিসিশনে এসেছি।’
শান্ত বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, কারণগুলোর জন্য তিনি আগে ক্যাপ্টেনসি ছেড়ে দেওয়ার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ওই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়েছে। এবং ক্রিকেট বোর্ড তাকে পুরোপুরি সাপোর্ট দেবে। একসময় আপনি তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক ফর্মুলা পছন্দ করেননি।
এখন দেখা যাচ্ছে যে তিন ফরম্যাটে তিন ক্যাপ্টেন। আপনারা ড্রেসিং রুমও সেভাবেই শেয়ার করছেন। একসাথে ইতিবাচক মন নিয়ে কাজ করছেন। আগামীতে তিন ক্যাপ্টেন একসাথে ড্রেসিং রুমে থাকলে কি কোন অস্বস্তি বোধ করবেন?
শান্তর জবাব, ‘নাহ! এটা তো আমার মনে হয়েছিল। এটা মনে হওয়ার পেছনে যথেষ্ট কারণও ছিল। বাট আমি যেটা বললাম একটু আগে যে ক্রিকেট বোর্ডের সাথে খুব হেলদি একটা কনভারসেশন হয়েছে, খুব ভালো একটা কনভারসেশন হয়েছে যে কী কী প্রবলেম হতে পারে, এগুলো আমরা কিভাবে সমাধান করতে পারি, এই প্রবলেমগুলোই যেন না হয়। তো সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা খুবই ক্লিয়ার এবং আমি একদমই আশাবাদী যে এ ধরনের কোনো প্রবলেম হবে না। এর চেয়ে থেকে ইম্পর্ট্যান্ট হলো যে বাকি যে দুইজন ক্যাপ্টেন আছেন, সেই দুইজনের সাথে আন্ডারস্ট্যান্ডিং খুবই ভালো। আমরা একসাথে বসেছিলাম, বসে আমরা কম্যুনিকেট করেছি যে আসলে আমাদের দলটাকে ইনফরমালি কিভাবে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, আমরা তিনজনই আশাবাদী। এই দলটার কী প্রয়োজন, আমরা ওই দলটাকে সেভাবে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবো। সো এখানে কম্যুনিকেশনে কোনো গ্যাপ নেই এবং আমি যেটার কারণে কনভিন্সড যে, ক্রিকেট বোর্ড আমাকে ওই হেল্পটুকু করবে। সো সেটার উপরে বিশ্বাস রেখে আমি ফেরত এসেছি এবং আমার কাছে মনে হয়েছে যে সামনে ভালো কিছু হবে।’
এআরবি/আইএইচএস/

2 hours ago
2









English (US) ·