নিবন্ধন বাতিলের সময় গত ১৫ বছর ‘প্রতিকূল পরিবেশে’ থাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখতে পারেনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী বছর দলের অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেখিয়ে আয়-ব্যয় বিবরণী দাখিল করবে দলটি।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আমরা বাড়িঘরে থাকতে পারি নাই। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে যাবো কেন? খুলতে যদি যেতাম আয়নাঘরে ঢুকতে হতো। সে কারণে যে রিটার্নটা আমরা এখন দিয়েছি সেখানে ব্যাংকের তথ্যের উল্লেখ নেই। সামনে আগামী রিটার্নের সময় অবশ্যই পরিবেশ অনুকূল থাকলে আমরা এটা করবো।
২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলতি বছর তারা নিবন্ধন ফিরে পায়। সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এক যুগ পর ফের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিলো দলটি।
জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল গত ৩১ জুলাই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ২০২৪ পঞ্জিকাবর্ষের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেন। তবে সেই প্রতিবেদনের তথ্য সাংবাদিকরা জানতে পারেন মঙ্গলবার।
২০২৪ সালে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা আয়ের বিপরীতে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
নির্বাচন কমিশনের দল নিবন্ধন বিধি অনুযায়ী, প্রত্যেকটি দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যাংকের নাম থাকা বাধ্যতামূলক। এবার অডিট রিপোর্ট জমা দিলেও জামায়াতের লেনদেনের তথ্যে কোন ব্যাংক ও কোন অ্যাকাউন্ট নম্বরে হয়েছে তা উল্লেখ ছিল না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দলটির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। বৈঠক শেষে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকার বিষয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ উল্টো প্রশ্ন রাখেন, কেন এর জবাবটা আপনিই দেন, আমরা ১৫ বছর কোথায় ছিলাম?
এ নেতার ভাষ্য, হিসাব পদ্ধতিতে যদি যান আমার বাবা-দাদার আমলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কত জনের ছিল? কোটি কোটি টাকার লেনদেন তো হয় দোকানগুলোয়। এখনও বাংলাদেশের একটা বিরাট সংখ্যক মানুষ আছে যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। হিসাবের যদি সিস্টেম আনেন যার যার মতো হিসাব রাখতে পারে। ইলেকশন কমিশনও তার কোনো শর্ত আরোপ করে না যে ব্যাংক হিসাব খুলেই দলের হিসাব রাখতে হবে। এটা আমার দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
হামিদুর রহমান আযাদ জানান, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে ২০০৮ সালের যে রিটার্ন জমা দেওয়া হয় সেখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট উল্লেখ ছিল।
তিনি বলেন, সে অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। কিন্তু এরপরে দেশে কী হয়েছে আপনারা জানেন।
এমওএস/এএমএ