যে কারণে ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানি ঝুলে আছে

19 hours ago 4

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফারনান্দো দিয়াস ফেরেস বলেন, অনেকদিন ধরে ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে বিফ (গরুর মাংস) আমদানি করার কথা থাকলেও পূর্বের সরকারের সময় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সার্টিফিকেশন না পাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, আমি বিগত সরকারের সময় এই বিষয় নিয়ে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম। প্রথমে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে অনুমতি নেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলাম। বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আসা কর্মকর্তারা বাংলায় নানান নীতিমালা দেন। শেষ পর্যন্ত গরুর মাংস আমদানির অনুমতি পাওয়া যায়নি।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বারিধারার একটি হোটেলে ব্রাজিল-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রপ্তানিযোগ্য পণ্যের প্রচার, বাজার বৈচিত্র্যকরণ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার এবং ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে নেটওয়ার্কিং সহজতর করার লক্ষ্যে বিবিসিসিআই চলতি বছরের ১৫-১৮ জুন ব্রাজিলের সাও পাওলোতে প্রথমবারের মতো ‘মেড ইন বাংলাদেশ প্রদর্শনী-২০২৫’ আয়োজন করতে যাচ্ছে। সে উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়াজন করা হয়।

বিবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিবিসিসিআই মহাসচিব মো. জয়নাল আবেদিন।

আরও পড়ুন

এ সময় রাষ্ট্রদূত পাওলো ফারনান্দো দিয়াস ফেরেস বলেন, বাংলাদেশে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম যদি ৫ ডলার হয়, ব্রাজিলে তা ৫ সেন্ট। এই এক্সপোর মাধ্যমে কেবল বাংলাদেশি পণ্য ব্রাজিলে প্রদর্শিতই হবে না, বরং টেকনোলজি ট্রান্সফারের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশে একটি গরু দিনে ৫ কেজি দুধ দেয়, কিন্তু ব্রাজিলের একটি গরু দিনে ৪৫ কেজি দুধ দেয়। আমরা বাংলাদেশে প্রযুক্তি সহায়তা করতে পারি, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের আমিষের চাহিদা পূরণ হবে। তবে এর জন্য ব্যক্তিখাতকে এগিয়ে আসতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, ব্রাজিলের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিযোগিতামূলক নয় বরং সহায়তামূলক। ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে রপ্তানি মাত্র ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ প্রদর্শনী-২০২৫’ বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশি আমদানিকারকদের পাশাপাশি রপ্তানিকারকদের জন্য নতুন বাজারে প্রবেশ এবং তাদের ব্যবসাকে বিশ্বব্যাপী উন্নীত করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশি প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এক্সপোতে স্টল দিয়ে অংশগ্রহণ করবেন।

বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জন্য ব্রাজিলে ব্যবসায়িক জোট গড়ে তোলার পাশাপাশি সয়াবিন, চিনি এবং শিল্প যন্ত্রপাতির মতো উচ্চমানের পণ্য অন্বেষণের সুযোগ সৃষ্টি হবে এই এক্সপোর মাধ্যমে।

মো. জয়নাল আবেদিন এক্সপো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আগাম নিবন্ধন খোলা থাকবে। অংশগ্রহণকারী প্রদর্শকদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ৪ হাজার মার্কিন ডলার, আর বিটুবি নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের জন্য এই ফি ১ হাজার মার্কিন ডলার। ব্রাজিলে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, ফার্মাসিটিক্যালস, পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি ব্রাজিল থেকে মিনারেল, ফুয়েল, অয়েল, বিফ, পোল্ট্রি, আমদানি করা যেতে পারে। বাণিজ্যের পাশাপাশি ব্রাজিলের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন এই এক্সপোর মাধ্যমে।

অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ ব্রাজিল দূতাবাসের ডেপুটি হেড অফ মিশন লিওনার্দো ডি অলিভেইরা, কৃষি অ্যাটাশে সিল্ভিও লুইজ রদ্রিগেজ টেস্টাসেক্কা এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসআরএস/ইএ

Read Entire Article