যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে

1 month ago 9

লক্ষ্মীপুরে যৌতুকের এক লাখ টাকা না পেয়ে মো. হাসান নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে (২৬) হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করে। পরে থানা থেকে তাকে নিজের জিম্মায় ছাড়িয়ে আনেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন। ঘটনাটি নিয়ে মামলা নিতেও গড়িমসি করছে পুলিশ।

রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে নিহত ফাতেমার বাবার বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের সদস্যরা এসব অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত হাসান টুমচর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও টুমচরের কালিচর গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে।

এসময় বক্তব্য রাখেন নিহত ফাতেমার বাবা আবুল খায়ের, মা মরিয়ম বেগম, ভাই আবু হেনা, স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন প্রমুখ।

আবু হেনা বলেন, সাত বছর আগে হাসান ফাতেমাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে হাসান। বিয়ের তিনমাস পর থেকে তাকে মারধর করে। আমার বোনের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ছোট ছেলের বয়স ৬ মাস। বুধবার (৬ আগস্ট) ফাতেমা আমাদের বাড়ি থেকে টুমচর শ্বশুরবাড়িতে যায়। হাসান তার মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা চেয়েছে। আমরা টাকা দিতে পারিনি। খালি হাতে বাড়ি যাওয়ার কারণে হাসান আমার বোনকে হত্যা করেছে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। হাসান পরকীয়ায় আসক্ত ছিল। তিনি ভিডিও কলে অন্য মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছে। ফাতেমা আমাকে তা জানিয়েছে। বিভিন্ন সময় তিনি আমার বোনকে নির্যাতন করতেন।

যৌতুক না দেওয়ায় হাসান পরিকল্পিতভাবে ফাতেমাকে হত্যা করেছে উল্লেখ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিচারের দাবি জানিয়েছে নিহতের মা, বাবা ও প্রতিবেশীরা।

অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. হাসান বলেন, ‘আমি ফাতেমাকে হত্যা করিনি। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছে।’

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন বলেন, ‘থানায় দুই পক্ষ উপস্থিত ছিল। পরে পুলিশ আমার জিম্মায় হাসানকে আপাতত ছেড়ে দিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরূপ পাল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে ফাতেমাকে হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত পায়। পরে দুপুরে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রতিবেদন পেলে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে।’

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘হাসানকে আটক করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আনা হয়। পরে দুই পরিবারের লোকজন এসেছিল। একপর্যায়ে তাকে যুবদল নেতা লিংকনের জিম্মায় দেওয়া হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কাজল কায়েস/আরএইচ/জিকেএস

Read Entire Article