রংপুরের পীরগাছায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাওহীদের কর্মীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। উত্তেজিত জনতা সংগঠনটির সদস্যদের ৪টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ৩টি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ সিদাম এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং আরও দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার জিল্লাল হোসেন, তসলিম উদ্দিন, মুসলিম উদ্দিন, আব্দুল কুদ্দুস শামীম, কালা মিয়া ও লাল চান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে হিজবুত তাওহীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সংগঠনটির কর্মীরা আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি বড় ধরনের সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল।
এরইমধ্যে সোমবার সকালে আব্দুল কুদ্দুস শামীমের বাড়িতে ৩০-৩৫ জন বহিরাগত ব্যক্তির সমাগম ঘটে এবং তারা গোপন বৈঠক করছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে এলাকাবাসী সেখানে গিয়ে বাধা দেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
এ সময় উত্তেজিত জনতা হিজবুত তাওহীদের সদস্যদের ৪টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ৩টি বাড়ি ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে রংপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স এনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।
এ ঘটনায় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত হিজবুত তাওহীদের সদস্যদের কয়েকজনের দেখা মিললেও তারা গুরুতর আহত হওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, মঙ্গলবার হিজবুত তাওহীদের একটি সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। বর্তমানে পুরো এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আসিফা আফরোজ আদরী বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাওহীদের প্রায় ৩০-৩৫ জন সদস্য আজ সকালে ওই এলাকার একটি বাড়িতে গোপন বৈঠকের চেষ্টা করছিল। এ সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, অগ্নি সংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় চারজনকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার এবং দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।