রমজানে ফিলিস্তিনিদের আল-আকসায় যেতে দেবে না ইসরায়েল

3 hours ago 5

ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ, আল-আকসায় প্রতি বছর রমজান মাসে মুসল্লিদের ভিড় বেড়ে যায়। মুসলমানরা এই পবিত্র স্থানটিতে নামাজ পড়তে এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে আসেন। 

তবে, এ বছর ইসরায়েল এক নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার ফলে ফিলিস্তিনিদের জন্য আল-আকসা মসজিদে প্রবেশের সুযোগ সীমিত করা হবে।

ইসরায়েল ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অংশ হিসেবে যেসব ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছেন, তাদের আল-আকসায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। 

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষ এবং ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীদের আল-আকসায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত তরুণ ফিলিস্তিনিদের জন্য এই মসজিদে প্রবেশের অনুমতি নেই। 

প্রসঙ্গত, তরুণদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘদিন ধরে চলছে এবং ইসরায়েল বিভিন্ন সময় তাদের পবিত্র এ মসজিদে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। তারপরও অনেক তরুণ ফিলিস্তিনি নামাজ পড়তে এবং পবিত্র স্থানটিতে প্রার্থনা করতে সেখানে গিয়ে থাকেন।

এই ইস্যু নিয়ে পরিস্থিতি আরো জটিল হচ্ছে, কারণ ইসরায়েল রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদ এবং পূর্ব জেরুজালেমে যাওয়ার পথগুলোতে চেকপয়েন্ট বসানোর পরিকল্পনা করছে। সেখানে প্রতিদিন প্রায় ৩,০০০ পুলিশ মোতায়েন থাকবে, যাতে মুসল্লিদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। 

এ ছাড়া ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ পশ্চিমতীর থেকে মাত্র ১০,০০০ ফিলিস্তিনিকে আল-আকসায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবছে, যা একটি সীমিত সংখ্যা।

উল্লেখ্য, আল-আকসা মসজিদকে মুসলিমরা ‘আল-আকসা’ নামে অভিহিত করলেও, ইহুদিরা এটিকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ নামে চিহ্নিত করে থাকে, কারণ তাদের দাবি অনুযায়ী এখানে তাদের প্রাচীন প্রার্থনাস্থল ছিল। এই দ্বন্দ্বটির কারণে এই স্থানটি নিয়ে ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে।

এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে এখনও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়নি ইসরায়েল। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল নতুন শর্তজুড়ে বলেছে, যদি হামাস তাদের আরও চারটি জিম্মির মরদেহ ফেরত দেয় এবং এগুলো ফেরত দেওয়ার সময় কোনো আনুষ্ঠানিকতা না করে, তাহলে ৬০২ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তবে, এই শর্ত সম্পর্কে এখনও হামাস বা মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, ইসরায়েল মিডিয়া জানিয়েছে যে, নতুন শর্তের বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে অবহিত করা হয়েছে, তবে এখনো কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এই পরিস্থিতি ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠেছে এবং এটি তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকারগুলোর প্রতি ইসরায়েলের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

Read Entire Article