রহস্যময় গুপ্ত সংগঠন ইলুমিনাতি সম্পর্কে যা জানা যায়

3 weeks ago 10

ইলুমিনাতি, নামটি শুনলেই চোখে ভেসে উঠে রহস্যময় এক গুপ্ত সংগঠনের নাম। যারা পুরো পৃথিবীজুড়ে বিছিয়ে রেখেছে এক ভয়াবহ যড়যন্ত্রের জাল। কারা এ সংগঠনের সদস্য আর কীভাবে কাজ করে তা জানার আগ্রহ সবার। বলা হয়ে থাকে ইলুমিনাতির সদস্যরা মিশে থাকে আমাদের আশপাশেই, তাদের চেনা যায় না বা ধরা যায় না, কিন্তু টের পাওয়া যায়। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক গুপ্ত এ সংগঠন সম্পর্কে কিছু অজানা দিক। 

আজ থেকে ২৪৮ বছর আগে ‘ইলুমিনাতি’ নামে একটি গোপন আর বাস্তব সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দ্য অর্ডার অফ দ্য ইলুমিনাতি বা ইলুমিনাতি হলো ব্যাভারিয়াতে প্রতিষ্ঠিত একটি গোপন সমাজ। যা বর্তমান আধুনিক জার্মানির অংশ। এই সংগঠনটি ছিল ১৭৭৬ থেকে ১৭৮৫ সাল পর্যন্ত। 

ইলুমিনাতির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আইনের অধ্যাপক অ্যাডাম উইসাপট। ইলুমিনাতি গোষ্ঠীর প্রথম বৈঠকটি ১৭৭৬ সালের পহেলা মে ইঙ্গলস্ট্যাড শহরের কাছে একটি জঙ্গলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়, যেখানে পাঁচজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন এবং ওই পাঁচজন সংগঠনের গোপন আদেশ পরিচালনা করবে, এমন নিয়ম জারি করা হয়েছিল।

এক সময় গোষ্ঠীটি রাজনীতি, রাজতন্ত্র ও চার্চের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রভাব বাড়াতে থাকে।  ইলুমিনাতির কিছু সদস্য পরে তাদের সংগঠনে নতুন সদস্য আনতে ফ্রিম্যাসন সোসাইটিতে যোগ দেয়। ফ্রিম্যাসন সোসাইটি হলো শুধু পুরুষদের নিয়ে গঠিত একটি প্রাচীন গোপন সমাজ, যেখানে সব সদস্য একে অপরকে সাহায্য করে এবং নিজেদের যোগাযোগের জন্য গোপন চিহ্ন ব্যবহার করে। পরে ‘বার্ড অফ মিনার্ভা’ নামের একটি পাখি এই সমাজের প্রতীকী চিহ্ন হয়ে ওঠে। বার্ড অফ মিনার্ভার এই বার্ড আসলে একটি পেঁচা, যা রোমান জ্ঞানের দেবী মিনার্ভার প্রতীক।

কেউ যদি ইলুমিনাতিতে যোগ দিতে চায়, তাহলে তার সেই সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের অনুমতি এক কথায় সর্বসম্মত অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেইসাথে তাদের অঢেল সম্পদের মালিক হতে হবে এবং খ্যাতমান হতে হবে। এ ছাড়াও, ইলুমিনাতিতে সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি রয়েছে, যেখানে কিছু শ্রেণি বিভাজন দেখা যায়। 

একজন নতুন সদস্য হিসেবে এই সংগঠনে প্রবেশ করার পর তিনি নভিস পদবি পান। এরপর তিনি হন মিনারভাল। যা কি না নভিসের এক ধাপ উপরের স্তর। এর চাইতে উপরের স্তর হলো ‘এনলাইটেনড মিনারভাল’। সংস্থাটির পূর্ণ সদস্য হতে হলে ১৩টি শর্ত পূরণ করা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।

১৭৮৪ সালে, ব্যাভারিয়ার শাসক কার্ল থিওডর আইন দ্বারা অনুমোদিত নয় এমন কোনো করপোরেশন বা সমাজ তৈরি করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। পরের বছর তিনি দ্বিতীয় ডিক্রি পাস করেন, যেখানে স্পষ্টভাবে ইলুমিনাতিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ওই সময় ইলুমিনাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সেখানকার সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হতো, তখন বেশ কিছু নথি পাওয়া যায়, যেখানে নাস্তিক্যবাদ এবং আত্মহত্যার মতো ধারণাকে সমর্থন করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে গর্ভপাত করার নির্দেশনাও পাওয়া যায়।

Read Entire Article