রাকসু নির্বাচনে ৪৩ পদে লড়ছেন ৯১৮ প্রার্থী

6 hours ago 5

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ২৩টি পদে ৩০৫ জনসহ সিনেট ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৪৩টি পদে ৯১৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা রাকসুর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। রাকসু নির্বাচনে ১০টি প্যানেল ও বিভিন্ন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। রাকসুর কেন্দ্রীয় ২৩টি পদে ৩০৫ জন, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন, প্রতিটি হল সংসদের ১৫টি করে পদে ১৭টি হলের মোট ২৫৫টি পদে মোট ৫৫৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, একজন ভোটার ৪৩টি পদে ভোট দিতে সময় পাবেন ১০ মিনিট। অর্থাৎ একজন ভোটার একটি ভোট দিতে প্রায় ১৪ সেকেন্ডে সময় পাবেন। রাকসুতে ভিপি পদে ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন ও এজিএস পদে ১৬ প্রার্থী লড়াই করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন (৩৯ দশমিক ১ শতাংশ) ও ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৫ জন (৬০ দশমিক ৯ শতাংশ)। 

এবারই প্রথম আবাসিক হলের বাইরে রাকসু সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদের ভোটগ্রহণ হচ্ছে। ক্যাম্পাসের নির্ধারিত ৯টি ভবনে (৯৯০টি বুথ) শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন। সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী একাডেমিক ভবনে ভোট দেবেন জুলাই-৩৬ ও রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা (৪৬৬৫ ভোট)। মমতাজ উদ্দিন কলা ভবন নির্ধারণ করা হয়েছে মন্নুজান হলের জন্য (ভোট ২৩৭৮)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে ৩টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন তাপসী রাবেয়া, বেগম খালেদা জিয়া, রহমতুন্নেসা হলের শিক্ষার্থীরা (ভোট ৪২৮২)। 

এদিকে জাবির ইবনে হাইয়ান বিজ্ঞান ভবনে দুটি কেন্দ্রে ভোট দিবেন শহীদ হবিবুর রহমান ও শামসুজ্জোহা হলের ভোটাররা (ভোট ৪২৫৫)। জামাল নজরুল বিজ্ঞান ভবনের দুটি কক্ষে বিজয়-২৪ ও নবাব আবদুল লতিফ হলের ২৬৪৭ জন ভোটাররা ভোট দিবেন। সত্যেন্দ্রনাথ বসু অ্যাকাডেমিক ভবনে  ফজলুল হক ও মতিহার হলের মোট ২৮৬৪ শিক্ষার্থী; জগদীশ চন্দ্র ভবনে মাদার বখশ ও সোহরাওয়ার্দী হলের জন ৩৭৫৫ ভোটাররা ভোট দিবেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে সৈয়দ আমীর আলী ও শাহ মখদুম হলের ৩০৪২ শিক্ষার্থীদের ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

ভোটারদের মানতে হবে যেসব নিয়ম

নির্বাচন কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে ভোটকেন্দ্রে প্রার্থীদের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ভোটারকে শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে। এক কেন্দ্রের ভোটার অন্য কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পূর্বে ভোটার তালিকায় নাম, ভোটকেন্দ্র ও টেবিল নম্বর যাচাই করে নিতে হবে। ভোট প্রদানের পূর্বে আঙুলে অমোচনীয় কালি দেওয়া হবে।

এছাড়া ৩টি করণীয় ও ৪টি বর্জনীয় বিষয় ভোটারদের মেনে চলতে বলা হয়েছে। এগুলো হলো- শান্তিপূর্ণভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি ও নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশের চারকোনা ঘরে সরবরাহকৃত সাইনপেন দিয়ে ক্রস চিহ্ন দিতে হবে। ভোট প্রদান শেষে ভোটকেন্দ্রের ৫০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে প্রচার-প্রচারণা করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা বা ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে মোবাইল, ক্যামেরা বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে আনা যাবে না।

সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা সাত ঘণ্টা চলবে এ ব্যালট যুদ্ধ। তবে চারটার মধ্যে যারা ভোটকেন্দ্রের আঙিনায় প্রবেশ করবেন, যত সময় লাগুক, তারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। একজন ভোটার গড়ে ১০ মিনিট সময়ে কোনো রকম বিঘ্ন ছাড়াই সব কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ে ভোট দিতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।

ভোট গণণা হবে ৬টি অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) মেশিনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জায়গায় এলইডি স্ক্রিনে ফল গণনা প্রদর্শিত হবে। সবশেষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে সব কেন্দ্রের মোট ফল ঘোষিত হবে। ভোটগ্রহণ শেষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোট গণনার পর ফলাফল ঘোষণা করা হবে। ভোট গণনার পুরো প্রক্রিয়া সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত থাকবে।

Read Entire Article