আগামী তিন দিনের মধ্যে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩টি স্থানে উৎপাদক থেকে ডিলারের মাধ্যমে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে ডিম সরবরাহ করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দুই সপ্তাহের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার টিসিবি ভবনে অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ডিমের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (ফার্ম ও করপোরেট), এজেন্ট-ডিলার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী, ডিম ব্যবসায়ী সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আজ সভায় পরীক্ষামূলকভাবে ডিম সরবরাহ করার সিদ্ধান্তসহ ৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
তিনি জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তেজগাঁও বাজার, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাদেক খান কৃষি মার্কেট (মোহাম্মদপুর) ও উত্তরা-১০ (খামারপাড়া রোড) স্থানগুলোয় এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাপ্তান বাজার, নিউমার্কেট, খিলগাঁও, জুরাইন, কোনাপাড়া সারুলিয়া, শনির আখড়া ও চিটাগাং রোডসহ ১৩টি কেন্দ্রে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরাসরি উৎপাদক থেকে এজেন্ট বা ডিলারের মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য সরবরাহ করা হবে। এর সার্বিক দায়িত্বে থাকবে দুই সিটি করপোরেশন।
এর মধ্যে তেজগাঁও বাজার ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ৬ দশমিক ৫ লাখ করে মোট ১৩ লাখ এবং অবশিষ্ট ১১টি বাজারে মোট ৭ লাখ ডিম সমানুপাতিক হারে বণ্টন করে বিক্রির জন্য সরবরাহ করা হবে বলে তিনি জানান।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ অনুষ্ঠিত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্ধারিত ১৩টি বাজারে ডিম সরবরাহের লক্ষ্যে গাড়ি পার্কিংসহ লোডিং-আনলোডিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসকদের মৌখিক ও চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।’
এ ছাড়া চাহিদা কম থাকাকালীন ডিম সংরক্ষণের বিষয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ডিম সংরক্ষণসংক্রান্ত খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের জন্য কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে দ্রুতই গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, ‘বর্তমানে দেশের মোট ডিমের চাহিদা প্রতিদিন ৪ দশমিক ৫ কোটির কিছু বেশি। এর মধ্যে কিছু পরিমাণ আমদানি করতে হয়। সরবরাহকারীরা আমাদের প্রথম বৈঠকে জানিয়েছিলেন যে প্রতিকূল আবহাওয়া ও আকস্মিক দুর্যোগ না থাকলে অভ্যন্তরীণভাবে চাহিদা মেটানো সম্ভব।’
আলীম আখতার খান বলেন, ‘বর্তমান সংকট কাটাতে সরকার আমাদের ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যতে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকেই দেশের চাহিদা সম্পূর্ণভাবে মেটানো; যেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব বলে মনে করি।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আব্দুল জলিল, পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগ) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, উপপরিচালক (কার্যক্রম) আতিয়া সুলতানা এবং উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার উপবিভাগ) আফরোজা রহমানসহ অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তারা।