রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় সাড়ে তিন হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মো. সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঈমান আকিদা রক্ষা কমিটির ব্যানারে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফকীর মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ কর্মসূচির করে স্থানীয়রা। সভায় বক্তব্য শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দরবারের দিকে যেতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি গাড়ি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসির গাড়ি ভাঙচুর করে। সেই সঙ্গে ৫ পুলিশ সদস্য এবং স্থানীয় প্রশাসনের দুজনকে পিটিয়ে ও ঢিল ছুঁড়ে আহত করে। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা করে নুরাল পাগলের বাড়ি ও দরবারের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভবন ও দরবার ভাঙচুর করে আগুন দেয়। বিক্ষোভের একপর্যায়ে জনতা নুরাল নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় নিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে ফরিদপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাতে রাসেল মোল্লা (২৮) নামে এক ব্যাক্তি নিহত হন।
রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে কিছু উৎসুক ব্যক্তি প্রথমে পুলিশের ওপর হামলা করে। এসময় তারা ইউএনও ও পুলিশের ৩টি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে তারা বিক্ষোভ নিয়ে নুরাল পাগলের মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় রাতেই গোয়ালন্দ ঘাট থানায় অজ্ঞাতপরিচয় সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে এ ঘটনায় যারা ইচ্ছাকৃতভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করতে চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি।
রুবেলুর রহমান/এমএন/এএসএম