রাজশাহীতে গত বছরের চেয়ে এবার ডেঙ্গুরোগী কমেছে। কমেছে মৃত্যুহারও। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, রোগীদের সচেতনতা ও দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির কারণেই এবার সুস্থতার হার বেড়েছে।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় মোট এক হাজার ৬৭৯ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করে ২১০ জনের শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ।
এদিকে রোববার (৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছে এক হাজার ২২৮ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছে চারজন। মৃত্যুহার ০ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে এক হাজার ১৮৮ জন। চিকিৎসাধীন ৩৬ জন।
এর আগে গত বছর রাজশাহী জেলায় চার হাজার ৬১৯ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করে ৬৯৩ জনের শনাক্ত হয়। ওই বছর শনাক্তের হার ছিল ১৫ শতাংশ। গত বছর জেলায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হয়।
২০২৩ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ হাজার ৪২৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নেয়। মারা যায় ৩৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যায় পাঁচ হাজার ৩৮৫ জন।
রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা আবরার সাঈর। গত ৫ নভেম্বর তার ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। তিনি বলেন, ‘আমি বাসা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন ভালো আছি। ডেঙ্গুর ধকল কাটিয়ে উঠছি। আক্রান্ত হওয়ার কয়েক দিন পর হাসপাতালে ভর্তি হতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তারা ভর্তি নেননি। বাসা থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’
- আরও পড়ুন
- ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫০০ ছাড়ালো
- ডেঙ্গুতে আরও ৫ মৃত্যু, আক্রান্ত ৫৬২
- ঢামেকে ডেঙ্গুরোগীর চাপ থাকলেও নেই চিকিৎসা সংকট
- রাজশাহী মেডিকেলে ডেঙ্গুতে নারীর মৃত্যু
রাজশাহী নগরীর আহম্মেদপুর পঞ্চবটি এলাকার বাসিন্দা মুস্তাফিজুর রহমান। তিনিও এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অক্টোবর মাসে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
মুস্তাফিজুর রহমান জানান, চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ও বাসায় বিশ্রাম নেওয়ার ফলে তার ডেঙ্গু সেরে গেছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ। তবে কিছুটা ধকল এখনও আছে।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন আবু সাঈদ মো. ফারুক বলেন, রাজশাহী জেলায় গত বছরের তুলনায় এবার রোগী কম। পুঠিয়া উপজেলা বাদে অন্য সব উপজেলায় রোগী শনাক্তের হার নেই বললেই চলে। উপজেলা পর্যায়েও রোগী শনাক্ত হচ্ছে খুব কম। এ বছর জেলায় ডেঙ্গুতে কেউ মারা যাননি।
সিভিল সার্জন বলেন, রোগীরা সচেতন হয়েছেন। পাশাপাশি মশক নিধন কার্যক্রম বৃদ্ধির কারণেই ডেঙ্গু আক্রান্ত কমেছে।
রাজশাহী মেডিকেল কালেজ হাসপাতলের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, আগের চেয়ে রোগীরা সচেতন হয়েছেন। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির কারণেই এখন সুস্থতা বেড়েছে। আগে রোগীরা আক্রান্ত হওয়ার সাত থেকে দশদিন পর হাসপাতালে আসতেন। এখন তারা তিন-পাঁচ দিনের মধ্যেই চলে আসছেন। ফলে তারা সুস্থ হয়েই বাড়ি ফিরছেন। এ বছর আমাদের যে কয়েকজন মারা গেছেন তারা সবাই ১০ দিনের পর আসেন। মূলত এ বছর সারা দেশেই ডেঙ্গুর প্রভাব কম আছে। পাশাপাশি সচেতনতার কারণেও এবার ডেঙ্গু রোগী কমেছে।
এসএইচ/ইএ/এমএমএআর/এএসএম