ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া এরই মধ্যে জিতে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় অনুষ্ঠিতব্য ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ঠিক ২ দিন আগে এমন মন্তব্য করলেন তিনি।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) প্যাট্রিয়ট নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অরবান বলেন, আমরা এখনো এমনভাবে কথা বলছি যেন যুদ্ধ চলছে। কিন্তু তা নয়। ইউক্রেনীয়রা যুদ্ধে হেরেছে আর রাশিয়া জিতে গেছে। এখন শুধু প্রশ্ন- পশ্চিমা দেশগুলো কবে ও কোন পরিস্থিতিতে স্বীকার করবে যে এটা ঘটেছে এবং এর ফলাফল কী হবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন, আপনি যদি আলোচনার টেবিলে না থাকেন, তবে আপনি আসলে সেই টেবিলের মেনুতে আছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া আলোচনা করছে, কিন্তু আপনাকে ডাকেনি। তাই বারবার ফোন করা, লবিং করা কিংবা বাইরে থেকে চিৎকার করা বাদ দিন।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি ইউক্রেনের দখল হওয়া কিছু ভূখণ্ড ফেরানোর চেষ্টা করবেন। সোমবার তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের বড় অংশ দখল করে নিয়েছে, আর আলাস্কার বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান।
ট্রাম্প আরও বলেন, জমি বিনিময়ের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। পুতিন যদি ন্যায্য প্রস্তাব দেন, তবে ইউরোপীয় নেতাদের তা জানাবেন ট্রাম্প। তবে তার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।
তবে ইউরোপীয় নেতারা ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে জেলেনস্কিকে অন্তর্ভুক্ত করার চাপ দিচ্ছেন। জেলেনস্কিও সতর্ক করে বলেছেন, কিয়েভকে বাদ দিয়ে কোনো চুক্তি হলে তা কার্যকর হবে না।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা অরবান রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার বিরোধিতা করে আসছেন। এ কারণে তিনি বহু ইউরোপীয় নেতার সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
হাঙ্গেরি তার অধিকাংশ জ্বালানি রাশিয়া থেকে আমদানি করে ও ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানেরও তীব্র বিরোধিতা করেছেন অরবান। তার যুক্তি, এতে হাঙ্গেরির কৃষক ও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পরও অরবান পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন। সম্প্রতি ইইউ নেতাদের একটি যৌথ বিবৃতিতে তিনি সই করেননি। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছি, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের স্বাধীনতা থাকা উচিত।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ