মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর সহায়তায় রাশিয়ার দখল করা সব ভূখণ্ড ফেরত পেতে পারে ইউক্রেন। এটি ইউক্রেন নীতিতে তার পূর্বের অবস্থান থেকে নাটকীয় পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, সময়, ধৈর্য এবং বিশেষ করে ন্যাটোর অর্থনৈতিক সহায়তা থাকলে যুদ্ধ শুরুর আগের সীমান্ত ফিরে পাওয়া সম্ভব।
ট্রাম্প এর আগে বারবার বলেছিলেন যুদ্ধ থামাতে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়কেই কিছু ভূখণ্ড ছাড়তে হবে। জেলেনস্কি ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা সব সময়ই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। পোস্টে ট্রাম্প রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনাকে ‘দিকহীন’ বলে সমালোচনা করে বলেন, একটি প্রকৃত সামরিক শক্তি হলে তারা এক সপ্তাহের মধ্যে এই যুদ্ধ জিততে পারতো।
তিনি রাশিয়াকে ‘কাগুজে বাঘ’ বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও রাশিয়া বড় ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যায় আছে এবং এটাই ইউক্রেনের সুযোগ।
বৈঠকের পর জেলেনস্কি ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যুদ্ধ শেষে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প প্রস্তুত আছেন এবং তিনি ‘গেম-চেঞ্জার’ হতে পারেন। ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ সমর্থন না করলেও এবার তিনি জোরালো ন্যাটো প্রতিক্রিয়ার পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ন্যাটো দেশগুলোর উচিত রুশ বিমান তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করলে গুলি করে নামানো।
জাতিসংঘ সদর দফতরে অবস্থানরত কূটনৈতিক সম্পাদক জেমস বেস বলেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য মার্কিন অবস্থানে বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে, কারণ জেলেনস্কি যুদ্ধের শুরু থেকেই পূর্ণ ভূখণ্ড পুনর্দখলের দাবি জানিয়ে আসছেন। ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কূটনীতিকরা এই পরিবর্তনে বিস্মিত হলেও স্বাগত জানিয়েছেন।
এদিকে রাশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। সম্প্রতি রাশিয়ার তিনটি মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে ন্যাটো যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন করে। এস্তোনিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে। পোল্যান্ডও জানিয়েছে, রাশিয়ার ড্রোন বারবার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে, যা তারা ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ন্যাটো সতর্ক করেছে যে, এ ধরনের লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় তারা সব ধরনের প্রয়োজনীয় সামরিক ও বেসামরিক পদক্ষেপ নেবে।
টিটিএন