রাসিকের ১৬১ কর্মীকে অব্যাহতি, ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ

2 months ago 26

অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মাস্টাররোলে নিয়োজিত ১৫৯ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই অপরাধে সিটি করপোরেশনের দুই কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কার ও ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও রাসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর গত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কয়েক ধাপে এসব নির্দেশনা জারি করেন।

রাসিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ ধাপে রাসিকে মাস্টাররোলে নিয়োজিত ১৫৯ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল শেখ ও সাধারণ সম্পাদক আজমীর আহমেদ মামুনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তারা দুজনই সিটি করপোরেশনের স্থায়ী কর্মচারী ও রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পদে ছিলেন। এর বাইরে রাসিকের ১৭ স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ২১ অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করেছেন প্রশাসক।

স্থায়ী কর্মরতদের মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ১৬ জনকে ও ১২ নভেম্বর তিনজনকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়। অস্থায়ী কর্মরতদের মধ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর ৯ জন ও ১২ নভেম্বর ১২ জনকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়। এসব চিঠিতে পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়।

শোকজ করা স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ, নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এবিএম আসাদুজ্জামান সুইট, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিজামুল হোদা, জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিশু, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু, সাবেক মেয়র লিটনের ব্যক্তিগত সহকারী এবং রাসিকের খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা বিপুল কুমার সরকার, ট্যাক্সেশন কর্মকর্তা (বাজার) আবুল বাশার মাহমুদ মো. তাজউদ্দিন, অডিটর সাখাওয়াত, আদায়কারী একেএম আবু সাকের, মিলন আকতার, সাগর দাস, মনিরুজ্জামান মনির, মাসুক আলম খান সুমন, সুলতান আলী, দপ্তরি আজহার আলী, এমএলএস মাহমুদন্নবী ও ইসমাইল হোসেন রনি।

শোকজের বিষয়ে রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ নূর-ঈ-সাইদ বলেন, ‘চিঠি পেয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছিল। আমি তার লিখিত জবাব দিয়েছি। এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য নেই।’

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ‘আপনি জনপ্রশাসন বা জনসংযোগ শাখায় যোগাযোগ করেন’ বলেই ফোন কেটে দেন নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এবিএম আসাদুজ্জামান সুইট।

সার্বিক বিষয়ে রাসিকের প্রশাসক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, অস্থায়ী কর্মচারীদের মধ্যে যারা কর্মচারীসুলভ আচরণ না করে শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণ করেছেন, তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারও কারও কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক না হওয়ায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অস্থায়ী কর্মচারীরা দৈনিক মজুরিভিত্তিক। কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন না হলে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারে। স্থায়ী কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ এবং শোকজে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বর্ণনা দেওয়া আছে।

সাখাওয়াত হোসেন/এসআর/জিকেএস

Read Entire Article