রাসিকের ১৬১ কর্মীকে অব্যাহতি, ৩৮ জনকে শোকজ

1 week ago 8

অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মাস্টার রোলে নিয়োজিত ১৬১ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একই অপরাধে দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত ও ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও রাসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর গত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কয়েক ধাপে এসব নির্দেশনা জারি করেন।

রাসিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ ধাপে রাসিকে মাস্টার রোলে নিয়োজিত ১৫৯ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল শেখ ও সাধারণ সম্পাদক আজমীর আহমেদ মামুনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তারা উভয়েই সিটি করপোরেশনের স্থায়ী কর্মচারী ও রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের পদে ছিলেন। এর বাইরেও রাসিকের ১৭ স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ২১ অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করেছে প্রশাসক। স্থায়ী কর্মরতদের মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ১৬ জনকে ও ১২ নভেম্বর তিন জনকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়। আর অস্থায়ী কর্মরতদের মধ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ৯ জনকে ও ১২ নভেম্বর ১২ জনকে শোকজের চিঠি পাঠানো হয়। পরে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের শোকজের জবাব দিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

শোকজ করা স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ, নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এবিএম আসাদুজ্জামান সুইট, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিজামুল হোদা, জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মিশু, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু, সাবেক মেয়র লিটনের ব্যক্তিগত সহকারী এবং রাসিকের খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা বিপুল কুমার সরকার, ট্যাক্সেশন কর্মকর্তা (বাজার) আবুল বাশার মাহমুদ মো. তাজউদ্দীন, অডিটর সাখাওয়াত, আদায়কারী একেএম আবু সাকের, মিলন আকতার, সাগর দাস, মনিরুজ্জামান মনির, মাসুক আলম খান সুমন, সুলতান আলী, দপ্তরি আজহার আলী, এমএলএস মাহমুদন্নবী ও ইসমাইল হোসেন রনি।

শোকজের ব্যাপারে রাসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ বলেন, ‘আমি একটা অভিযোগের চিঠি পেয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং এর লিখিত জবাব দিয়েছি। এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য নেই।’

রাসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এবিএম আসাদুজ্জামান সুইটের কাছে মোবাইল ফোনে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জনপ্রশাসন বা জনসংযোগ শাখায় যোগাযোগ করার কথা বলে মোবাইল সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে রাসিকের প্রশাসক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘অস্থায়ী কর্মচারীদের মধ্যে যারা কর্মচারী সুলভ আচরণ না করে শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণ করেছেন তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারও কারও কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক না হওয়ায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী কর্মচারীরা দৈনিক মজুরিভিত্তিক, কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন না হলে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারে। আর স্থায়ী কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ এবং শোকজে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বর্ণনা দেওয়া আছে।’

Read Entire Article