নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় হত্যার উদ্দেশে জাহাঙ্গীর মাহমুদ নামের এক সাংবাদিককে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া ও গুলি করার ঘটনায় জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। রোববার (১ ডিসেম্বর) রাত সাতটার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় ওই সাংবাদিকের বাড়িতে এ গুলির ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদ দৈনিক কালবেলা পত্রিকার রূপগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জাহাঙ্গীর মাহমুদ জানান, ‘কালবেলা পত্রিকায় কর্মরত থাকা অবস্থায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইয়াসিন মিয়া ওরফে ফেন্সি ইয়াসিন বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ অপরাধ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মাসুদুর রহমান ওরফে কাইল্লা মাসুদ গ্রুপের হয়ে কাজ করেন ইয়াসিন। সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৫ দিন ধরে ইয়াসিন ক্ষতিপূরণ বাবদ আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।’
তিনি বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের জের ও দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় গত ১৬ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেন্সি ইয়াসিনের নেতৃত্বে কাজল, রাব্বিল, রকি, ইমনসহ ৪০-৫০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশ ও মাথা থেঁতলে যায়। হামলাকারীরা বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকা ত্যাগ করে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সাংবাদিক রাসেল আহমেদ বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই আসামি পক্ষের সন্ত্রাসীরা মামলা তুলে নিতে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। হুমকির ঘটনায় শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। রোববার দুপুরে মামলার আসামি রাব্বিল ও রকি নারায়ণগঞ্জ আদালতে জামিন চান। আদালত রকিকে জামিন দিলেও রাব্বিলকে কারাগারে প্রেরণ করেন। এসব ঘটনার জেরে বিকেলে কাইল্লা মাসুদ ও ফেন্সি ইয়াছিনের নেতৃত্বে আমার বাড়ির আশপাশের রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে মহড়া দেয়। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাসায় গুলি ছোড়ে একদল সন্ত্রাসী। গুলিটি জানালা ছিদ্র হয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে যায়। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেও ঘটনার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’
তবে এ ব্যাপারে মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন।
ভুলতা পুলিশ ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।