মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল এলাকার স্বাধীন জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রেনু বেগম (৫৫) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেছেন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের পানিছত্র এলাকার মৃত মালেক মোল্লার স্ত্রী রেনু বেগমকে বৃহস্পতিবার দুপুরে হার্নিয়া রোগ নিয়ে শহরের ইটেরপুল এলাকার স্বাধীন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার দুপুরে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক আল আমিন মোহাম্মদ নওশান অপারেশন করান। প্রায় ৪ ঘণ্টা অপারেশন শেষে রোগীকে বের করা হয়। অপারেশনের পর থেকে ওই রোগীর যন্ত্রণা শুরু হয়। রোগীর সঙ্গে থাকা লোকজন বিষয়টি বার বার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা গুরুত্ব দেয়নি। শনিবার সন্ধ্যায় অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে রেনু বেগম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি মারা যান।
তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু রোগীর লোকজন বুঝতে পারেন রেনু বেগম মারা গেছেন। এ সময় নিহতের আত্মীয়-স্বজন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেন তারা।
এদিকে ঘটনার পরপরই চিকিৎসক আল আমিন মোহাম্মদ নওশান হাসপাতাল থেকে দ্রুত সরে পড়েন।
রেনু বেগমের মেয়ে ঝুমুর আক্তার বলেন, এই হাসপাতালের চিকিৎসক আল আমিন মোহাম্মদ নওশান আমার মাকে ভুল চিকিৎসা করেছেন। এতে করে আমার মা মারা গেছেন। অপারেশনের পর কয়েকবার বলেছি, আমার মায়ের ব্যথা হচ্ছে, কিন্তু তারা কোনো গুরুত্বই দেয়নি। আমার মা মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে কৌশলে ডাক্তার পালিয়ে গেছেন। এই ঘটনার বিচার চাই। যাতে করে এমন ঘটনা আর ঘটাতে না পারেন।
স্বাধীন জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুয়েল বেপারী বলেন, আমাদের চিকিৎসায় কোনো ভুল ছিল না। আমরা ঠিকমতোই সব করেছি। তবে রোগীর শ্বাসকষ্ট ছিল, এটা আমাদের কাছে গোপন করেছে। তাছাড়া যে চিকিৎসক এই অপারেশন করেছেন তারও কোনো ভুল ছিল না। অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট ছিল, তাই রোগী মারা গেছেন। তাছাড়া রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের অনেক আগেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা যাননি। এখানে আমাদের কোনো ভুল নেই। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রাইভেট হাসপাতালে এক রোগী মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। পরে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। রোগীর পরিবার থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এফএ/এমএস