বর্তমান সময় প্রযুক্তি উৎকর্ষতার স্বর্ণ যুগ। প্রতিদিনই পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান সহজ হচ্ছে। সহজ হচ্ছে সবকিছু। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় খুলে যাচ্ছে সম্ভাবনার নতুন দোয়ার। তাদের গবেষণার ফল হলো রোবট। এই রোবট মানুষের জীবনযাত্রার অংশ হয়ে উঠছে। এটি একটি ইলেক্ট্রো-যান্ত্রিক ব্যবস্থার নাম, যার কাজকর্ম, অবয়ব ও চলাফেরা দেখে মনে হয়, এটি স্বেচ্ছায় কাজ করছে।
রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন কাজে মূলত মানুষের বিকল্প হিসেবে। আগে যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান চালাতে হাজারো জনবলের দরকার হতো, এখন সেখানে কয়েকটি অটোমেটিক মেশিন ও রোবট অল্প খরচে হাজারো মানুষের সমান আউটপুট দিতে পারে।
অনেকের ধারণা যে খুব শিগগির মানুষ রোবটকে জীবনসঙ্গী বানানো শুরু করতে পারে। এরই মধ্যে অনেকেই রোবটকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার আশা করে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। আদৌ কি রোবটকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়া এবং তার সঙ্গে স্ত্রীসুলভ আচরণ করা সম্ভব? গবেষকরা বলছেন, সত্যিই এমনটি ঘটতে যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে!
প্রশ্ন হলো, ইসলামের দৃষ্টিতে রোবটকে বিয়ে করা কি বৈধ? এ প্রশ্নের উত্তর পবিত্র কোরআনেই আছে। আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জোড়া থেকে তোমাদের জন্য পুত্র ও নাতিদের সৃষ্টি করেছেন, আর তিনি তোমাদের পবিত্র রিজিক দান করেছেন তারা কি বাতিলে বিশ্বাস করে এবং আল্লাহর নিয়ামতকে অস্বীকার করে?’ (সুরা : নাহাল, আয়াত : ৭২)
আল্লাহ তাআলা তোমাদেরই স্বজাতি থেকে তোমাদের স্ত্রী নির্ধারণ করেছেন, যাতে পরস্পরের ভালোবাসাও পূর্ণরূপে হয় এবং মানবজাতির আভিজাত্য এবং মাহাত্ম্যও অব্যাহত থাকে। যদি অন্য প্রজাতি থেকে তা নির্ধারণ করতেন, তাহলে তাদের মধ্যে এ রকমের মিল-মহব্বত থাকত না। (তাফসিরে ইবনে কাসির)
হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘এমন নারীকে বিয়ে করো যে প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী। কেননা আমি অন্যান্য উম্মতের কাছে তোমাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে গর্ব করব।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০৫০)
কোরআন-হাদিসের আলোকে বলা যায় যে, বিয়ের ক্ষেত্রে জীবনসঙ্গী হিসেবে রক্তে-মাংসে গড়া মানুষকে বেছে নিতে হবে এবং সে মুসলমান হতে হবে। সুতরাং অন্য কোনো জাতির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৩/৫) অতএব রোবটের সঙ্গেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েজ নয়।
আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন-
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
উচ্চারণ: রব্বানা হাব লানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউন, ওয়া জাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।
অর্থ: ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন, যারা আমাদের চোখ শীতলকারী হবে। আমাদের আল্লাহভীরুদের জন্য আদর্শ করুন।’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৭৪)