উজানের পানিতে সৃষ্ট বন্যা এবং টানা বর্ষণে লক্ষ্মীপুরে এ বছর আমন ধানের উৎপাদন অর্ধেকেরও কম হয়েছে। সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে ক্ষেতে হাঁটু বা কোমর পর্যন্ত পানি জমে থাকায় কৃষকেরা সময়মতো আমন চাষ করতে পারেননি।
অভিযোগ আছে, কৃষি বিভাগ সময়মতো ধানের বীজ ও চারা সরবরাহ করেননি। তবে যেসব কৃষকেরা চাষ করতে পেরেছেন; তারা ভালো ফলন ঘরে তুলে পেরেছেন। যদিও তাদের অনেকেই একাধিকবার ধানের চারা রোপণ করতে হয়েছে। সরকারি, স্থানীয় বাজার ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে সংগ্রহ করা বীজ এবং বিভিন্ন জেলা থেকে চারা এনে তারা ধান চাষ করেন।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুরে এ বছর ৮৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণে ৩৫ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এতে ধান ও গো-খাদ্যের উৎপাদন কম হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে ভবানীগঞ্জ, চর রমনী মোহন, টুমচর, শাকচর ইউনিয়নের কৃষকেরা ধান চাষ করেছেন। অন্য ১৭টি ইউনিয়ন, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার অর্ধেককে জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে আবাদ করা যায়নি।
সদরের চররুহিতা গ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘প্রথমে বন্যার পানিতে তার ক্ষেতের ধানের চারা পচে গেছে। পরে আবার ধার-দেনা করে আবাদ করেছেন। কিন্তু সব ধান ঝলসে গেছে।’ তিনি সরকারি কোনো সহায়তা পাননি বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
চরলরেন্স এলাকার কৃষক আবুল কালাম ও চরকাচিয়া গ্রামের আব্দুল মতিন জানান, পরিচর্যার কারণে এবার তারা ভালো ধান পেয়েছেন। সরকারি ছাড়াও বাজার থেকে তারা বীজ সংগ্রহ করেছেন।
তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ইবনে হুসাইন ভুলু বলেন, ‘বন্যার পানির কারণে ধান আবাদ করা যায়নি। অনেক ক্ষেতে কোমর সমান পানি ছিল। সরকারিভাবে কৃষকদের আশানুরূপ সহায়তা দেওয়া হয়নি।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, ‘বন্যা পরবর্তী কৃষকদের ব্রি ধান-৭৫ দেওয়া হয়েছে। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা আবাদ করতে পেরেছেন। এবার আবাদ কম হলেও ভালো ফলন হয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহেল মো. শামছুদ্দিন ফিরোজ জানান, এবার কৃষকেরা সময়মতো আমন চাষ করতে পারেননি। তাদের সরকারিভাবে বীজ ও ধানের চারা সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। ক্ষতি এড়াতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকদের পাশে ছিলেন।
এসইউ/এমএস