লবণের পানিতে বিপজ্জনক পেকুয়ার বিভিন্ন সড়ক
প্রতিদিন লবণের পানিতে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের পেকুয়ার প্রধান সড়ক ও মগনামা-রাজাখালী এবং উজানটিয়ার গ্রামীণ সড়কগুলো। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়কগুলো। এমনকি কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে ছোট-বড় গর্ত। এ ছাড়া লবণ পরিবহনের সময় পানি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। অথচ এ নিয়ে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।
লবণচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পেকুয়ার বানৌজা সড়ক দিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০টি ট্রাক বোঝাই করে শত শত টন লবণ পটিয়া, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে পেকুয়ার মগনামা ও রাজাখালী এবং উজানটিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সড়কের ওপর বড় বড় ট্রাক দাঁড় করে মাঠে উৎপাদিত ভেজা লবণ বোঝাই করা হচ্ছে। আবার মাঠে উৎপাদিত লবণ চলাচলরত রাস্তায় স্তূপ করে রাখছে বিক্রি করার জন্য। এসব লবণ পরিবহনের সময় পলিথিন মোড়ানোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
এদিকে রাজাখালী দশেরঘোনা নতুন ব্রিজে মাহাম্মদ, আমিন শরীফসহ বেশ কয়েকজন লবণ ব্যবসায়ী রাস্তায় লবণ স্তূপ করে রাখছে ট্রাকে তুলতে। আবার অনেকই ট্রাকে তুলছে অন্যজনের লবণ। উজানটিয়া সোনালীবাজারের উত্তর পাশে রাস্তায় স্তূপ করে রাখা লবণ ট্রাকে তুলছে। মগনামা ফুলতলা স্টেশনের পূর্ব পাশে বানৌজা সড়কের ওপর লবণ স্তূপ করে ট্রাকে তোলা হচ্ছে।
সড়কের ওপর ট্রাক দাঁড় করিয়ে লবণ বোঝাইয়ের কারণ জানতে চাইলে রাজাখালী নতুনঘোনা এলাকার ওয়াদু, আমির ও মোহাম্মদ আলম বলেন, এখানে লবণ মজুত করার কোনো গুদাম নেই। ফলে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে মাঠ থেকে লবণ বোঝাই করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, লবণবোঝাইকৃত ট্রাক ও কার্গো ট্রাক থেকে পানি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বিগত বছরগুলোয় অহরহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সময়ে পুলিশ লবণবোঝাই ট্রাক জব্দ করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে নীতিমালা করা দরকার। পলিথিন মুড়িয়ে ট্রাকে ও কার্গো ট্রাকে লবণ পরিবহনের নিয়ম থাকলেও অনেকে তা অমান্য করছেন। এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, লবণের পানির কারণে কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার। তারা আরও জানান, ট্রাকে পলিথিন বিছিয়ে লবণ বোঝাই করে পরিবহনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছি অনেকদিন ধরে। কিন্তু প্রশাসন তা বাস্তবায়নে গরজ দেখাচ্ছে না।
লবণ ব্যবসায়ী মাহামদ হোসেন জানান, ট্রাকের নিচে পলিথিন বিছিয়ে লবণ বোঝাই করলে সড়কে পানি পড়বে না, এটা ঠিক। কিন্তু পলিথিনের ওপর জমে থাকা পানিতে অর্ধেক লবণ গলে যায়, যার জন্য পলিথিন বিছানো হয় না।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী জানান, এটি জঘন্য অপরাধ, সড়কের ক্ষতি করা যাবে না। এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।