একেবারেই ফর্মে নেই লিটন কুমার দাস। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি- তিন ফরম্যাটের কোনোটিতেই হাসছে না টাইগার ক্রিকেটারের ব্যাট। রান করতে যেন ভুলেই গেছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
গত তিন মাসে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ, চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও আজ সোমবার তিন ম্যাচের প্রথম টি-টোয়েন্টি মিলিয়েও একটি ফিফটি নেই লিটনের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের চার ইনিংসে লিটনের রান ৪০, ২২ , ১ ও ২৫। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আরও করুণ অবস্থা। দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিশালী ৫০ ওভারের ফরম্যাটের তিন ম্যাচে লিটন খেলেছেন ২, ৪ ও ০ রানের ইনিংস।
আজ সোমবার সকালে ভিনসেন্টে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে প্রথম বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার আকিল হোসেনকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন লিটন (১ বলে ০)। তার আউট হওয়ার ধরনগুলোও রীতিমতো দৃষ্টিকটু।
লিটনের এমন আউটে অসন্তুষ্ট প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুও। বিজয় দিবসের বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনিও মুখ ফুটে স্বীকার করেছেন লিটনকে দেখে তিনিও চিন্তিত।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের আরও দুটি ম্যাচ বাকি। এসময় কোনো ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স, অ্যাপ্রোচ নিয়ে কোনোরকম মন্তব্য করা সমীচীন নয় জানিয়ে লিপু বলেন, ‘আমরাও বুঝতে পারি লিটন কুমার দাসের কাছ থেকে দল যা প্রত্যাশা করে। তিনি যে মানের ব্যাটসম্যান, সাদা বলের ক্রিকেটে ততটা ধারাবাহিক নন। এ কারণে একটা টুর্নামেন্টে (সিরিজ) নির্ধারণী ম্যাচেও কিন্তু আমরা তাকে দলের বাইরে রেখেছিলাম। তবে এই মুহূর্তে তিনি টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। একটা সিরিজ চলছে। আমার মনে হয়, এখন এটা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার আদর্শ সময় নয়। তবে এতটুকু বলতে পারি, আমরা তার আউট হওয়ার ধরন নিয়ে অবশ্যই চিন্তিত।’
লিটনের বাজে ফর্ম ও রানখরা নিয়ে কী ভাবছেন প্রধান নির্বাচক? লিটনকে আগামীতে ড্রপ দেওয়া হতে পারে? নাকি দল থেকে বিশ্রাম দিয়ে ব্যাটিং ত্রুটি শুধরানোর চেষ্টা করা হবে?
এসব প্রশ্নের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘নিকট ভবিষ্যতে যদি কিছু মেরামতের প্রয়োজন হয়, সেজন্য কোচরা আছেন। যদি সাময়িক বিরতি প্রয়োজন হয়, তার জন্যও কোচরা আছেন। অথবা তিনি যদি সামনের দুটো ম্যাচে ফেরত আসতে পারেন, তাহলে সবচেয়ে বেশি স্বাগত জানানো হবে।’
লিটনকে অধিনায়ক করা প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লিপু বোঝানোর চেষ্টা করেন, নিয়মিত অধিনায়কসহ আরও কয়েকজন ক্রিকেটারের চোট আছে। বোর্ডের হাতে বিকল্প কম। সে কারণেই হয়তো স্বল্প মেয়াদে লিটনের কাঁধে দল পরিচালনার গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে লিপুর কথা, ‘আমি মনে করি, হয়তো স্বল্পমেয়াদী হিসেব করে বোর্ড একটা সমাধান (লিটনকে অধিনায়ক বানানো) করার চেষ্টা করেছে। বোর্ডের হাতেও যে অনেক বিকল্প ছিল, তাও নয়। অনেক ক্রিকেটারই চোটে ছিল। তবে ইতিবাচক বিষয় আমি যেটা দেখি, ছন্দহীন একজন ব্যাটসম্যান নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরও (ছন্দহীনতা) ধারাবাহিক রেখেছেন। এমন সময় দল তাকে যে সহযোগিতা করেছে, দিন শেষে বিজয়ী দলের অধিনায়ক করেছে। আমার মনে হয়, এটা হয়তো তাকে অনুপ্রাণিত করবে। আমি মনে করি, অধিনায়কের জন্য দারুণ কাজ করেছে দল।’
এআরবি/এমএইচ/এমএস