লেনদেন ফের ৩০০ কোটির ঘরে, সূচকের বড় পতন

2 hours ago 4

টানা দরপতন আর লেনদেন খরা থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২৭ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। একই সঙ্গে লেনদেন কমে ফের ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। বাজারটিতে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ডিএসইতে ৩৫৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা চলতি বছরের ২৩ জুনের পর সবচেয়ে কম ছিল। এরপর লেনদেন কিছুটা বেড়ে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে উঠে আসে। তবে মাত্র দুই কার্যদিবস পরেই ডিএসইতে লেনদেন আবার ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে গেলো।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু লেনদেনের সময় ২০ মিনিট গড়ানোর আগেই দাম কামার তালিকায় চলে আসে বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।

আর প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর ভালো-মন্দ সব ধরনের কোম্পানির শেয়ারের ঢালাও দরপতন হতে থাকে। পতনের এ প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬০টির। আর ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৫০টির দাম কমেছে এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২০টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৫২টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২০টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৬৯ পয়েন্টে নেমেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৪ কোটি ১৮ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৬১ কোটি ৫৫ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৬৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ২০ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আনোয়ার গ্যালভানাজিং।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে—প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রবি, সিটি ব্যাংক, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ব্র্যাক ব্যাংক।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৪টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

এমএএস/এমকেআর/জিকেএস

Read Entire Article