লোহার ফাঁকের ঈদ আনন্দ, কেরানীগঞ্জ কারাগারে মানবিক ছোঁয়া

2 months ago 8
জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় উৎসবগুলোর একটি পবিত্র ঈদুল আজহা। কিন্তু লোহার দেয়ালের ওপারে থাকা মানুষের জন্য সেই আনন্দ যেন প্রতীক্ষার সীমানায় সীমাবদ্ধ। ঠিক সেই জায়গাতেই এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম দেখাল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জ। কারা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বন্দিদের মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আয়োজন করা হয় বস্ত্র বিতরণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং কোরআন তেলাওয়াত, আজান ও সিরাত কুইজ প্রতিযোগিতা। ঈদের আগে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বদলে ফেলা হয় কারাগারের বিভিন্ন সেল ও চলাচলের স্থান। একজন কারা কর্মকর্তা বলেন, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ শুধু শরীর নয়, মনকেও শুদ্ধ করে। বন্দিরা যেন অন্তত ঈদের দিনটিতে একটু প্রশান্তি পায়, সেই চেষ্টাই করেছি। পরিচ্ছন্নতার পর, বন্দিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ঈদের নতুন পোশাক। বিশেষ করে দুস্থ ও অসহায় বন্দিরা এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হন। একজন বন্দি চোখ মুছতে মুছতে বলেন, এটা যেন আমাদের পরিবার থেকে আসা ঈদ উপহার। যা কখনো কল্পনাও করিনি। এ আয়োজনের পেছনের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরে সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা চাচ্ছি, কারাগার যেন প্রকৃত অর্থে সংশোধনাগারে পরিণত হয়। ঈদের মতো আনন্দের দিনে কেউ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেই চেষ্টাই করছি। জেলার একে এম মাসুম বলেন, ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসবগুলোতে বন্দিদের মাঝে আনন্দ পৌঁছে দেওয়াটাও মানবিক দায়িত্বের অংশ। এ বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমরা এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করেছি। ১৫ মে থেকে শুরু হওয়া ধর্মীয় প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে ছিল কোরআন তেলাওয়াত, আজান এবং সিরাত কুইজ। মোট ১১৫ জন বন্দি অংশগ্রহণ করেন এ প্রতিযোগিতায়। বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয় ঈদের আগে। কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ মো. হাসান, দ্বিতীয় হাফেজ আবু বক্কর এবং তৃতীয় হাফেজ মো. ইস্রাফিল। আজান প্রতিযোগিতায় প্রথম হন আব্দুল্লাহ, দ্বিতীয় হাফেজ মো. ইস্রাফিল এবং তৃতীয় আবুল হাসেম। সিরাত কুইজে প্রথম হয়েছেন শহিদুল ইসলাম, দ্বিতীয় আল আমিন এবং তৃতীয় ইব্রাহিম।
Read Entire Article