শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার

3 months ago 7

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার (২১ মে)। ২০১৭ সালের এ দিনে রাজধানীর আসাদগেটে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন তিনি। 

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (২১ মে) দিনব্যাপী শফিউল আলম প্রধানের সংগ্রামী জীবনের ওপর চিত্র প্রদর্শনী ও স্মরণ সভার আয়োজন করেছে জাগপা। জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়াম হলে এ অনুষ্ঠান সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা চলবে বলে জানিয়েছেন জাগপার সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।

জাগপার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শফিউল আলম প্রধানের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় টোকরাভাষা গ্রামের প্রধান পাড়ায়। তার পিতা মৌলভি গমির উদ্দিন প্রধান অবিভক্ত পাকিস্তান মুসলিম লীগের সভাপতি এবং পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার ছিলেন। প্রধানের শিক্ষা জীবন কেটেছে সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়, বোরহান উদ্দিন কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলেজ ছাত্র সংসদের স্বতন্ত্র জিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল আলম প্রধান।

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানায় পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে পরাধীন বাংলার দিনাজপুরে স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিতে পর্যায়ক্রমে গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ৩০ মার্চ, ১৯৭৪ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজ দল আওয়ামী লীগের ৬৪ জন দুর্নীতিবাজের তালিকা (শ্বেতপত্র) প্রকাশ করেন শফিউল আলম প্রধান। শ্বেতপত্র প্রকাশের মাত্র ৫ দিনের মাথায় ৪ এপ্রিল, ১৯৭৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রহস্যজনক ৭ খুন হয়। বাকশালী কায়দায় প্রধানকে প্রথমে রাষ্ট্রীয় গুম এবং পরবর্তীতে ৭ খুনের দায়ে প্রধান আসামি করা হয়। ১৯৭৫ সালে তড়িঘড়ি করে বিচারকার্য সম্পাদন এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, বাকশাল পতনে ক্ষমতার পটপরিবর্তনে মামলার পুনঃতদন্তে আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে ৪ বছর পর ১৯৭৮ সালে মুক্তিলাভ করেন তিনি। ১৯৮০ সালের ৬ এপ্রিল ঢাকার রমনা গ্রিন চত্বরে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা প্রতিষ্ঠা করেন শফিউল আলম প্রধান। জাগপার ব্যানারে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ও বেরুবাড়ি লংমার্চ, দিনাজপুরে ইয়াসমিন হত্যা, ভারতীয় অপসংস্কৃতিবিরোধী, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে এবং টিপাইমুখ বাঁধবিরোধী আন্দোলন করেন তিনি।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে স্বেচ্ছায় কারাবরণ, ফেলানি হত্যাসহ সীমান্ত হত্যাবিরোধী আন্দোলন, পিলখানা গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার ও শহীদ সেনা দিবসের দাবিতে আন্দোলন, ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার প্রতিবাদে এবং সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতির প্রতিবাদে আন্দোলন করেন তিনি। 

জাগপা নেতারা জানান, কারাগার ছিল শফিউল আলম প্রধানের দ্বিতীয় বাড়ি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের সকল সরকারের আমলে কারাগারে থাকতে হয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শফিউল আলম প্রধানকে। সর্বমোট ২৭ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।

Read Entire Article