শরীয়তপুরে সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ থেকে মিছিলটি বের হয়ে কোর্টের মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় মিছিলে ঝাড়ু, জুতা এবং লাঠি প্রদর্শন করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তারা বলেন, শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটিতে যোগ্য ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়নি। কমিটির আহ্বায়ক দুই সন্তানের জনক। এ ছাড়া তার পরিবারের অধিকাংশ লোক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কমিটি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে করা হয়েছে। দ্রুত কমিটি বাতিল করে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নতুন করে কমিটি গঠনের দাবি জানাই।
স্থানীয় ছাত্রদল সূত্র জানায়, শরীয়তপুরে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের কমিটি নেই। পুরাতন কমিটি ২০২২ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে বিলুপ্ত করা হয়। এদিকে জেলায় ছাত্রদলের কার্যক্রম গতিশীল করতে মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে এইচএম জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক ও সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ছাত্রদলের একাংশের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, কমিটির আহ্বায়ক এইচএম জাকির হোসেন ২০০০ সালে পড়াশোনা শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি দুই সন্তানের জনক। তিনি শ্রমিক নেতা এবং জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের পদপ্রার্থী ছিলেন। যেখানে গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে ২০০৩ সালের পরবর্তী সময়ে ছাত্রদল করা ব্যক্তিরা জেলা কমিটিতে আসতে পারবে। তবে তিনি কীভাবে কমিটির আহ্বায়ক হলেন।
বাবু মাদবর নামের এক ছাত্রদল নেতা বলেন, যারা যোগ্য ব্যক্তি তাদের এ কমিটিতে যোগ্য স্থান দেওয়া হয়নি। যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে তিনি সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট থেকেও বয়সে বড়। তাছাড়া তার পরিবারের ৯৫ শতাংশ লোক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ ধরনের লোককে কেন ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদে দেওয়া হলো? দ্রুত এ কমিটি বাতিল করা না হলে আমরা কঠিন আন্দোলনে যাব।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী ও সদ্য ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পান্থ তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা ছাত্র রাজনীতি করে আসছি। কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি জেলা ছাত্রদলের কমিটি দেওয়া হয়েছে। সেখানে শ্রমিক নেতা ও দুই সন্তানের জনক এইচএম জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। আমরা এ কমিটি মানি না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক এইচএম জাকির হোসেন বলেন, একটি কমিটি করা হলে সেখানে সবাইকে খুশি করা সম্ভব হয় না। যারা ত্যাগী তাদেরই বাছাই করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল যেভাবে মনে করেছে সেভাবে কমিটি ঘোষণা করেছে। তাছাড়া আমাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। মূলত এ জেলা কমিটি সামনে সুশৃঙ্খল করে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।