শাহজালালে পুড়ে যাওয়া পণ্যের শুল্ক আদায় হলে ফেরত দেবে এনবিআর

4 hours ago 6

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া যেসব পণ্যের শুল্ক পরিশোধ করা হয়েছিল, আইন অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তা ফেরত দেবে। তবে সংস্থাটি পণ্যের ক্ষতিপূরণ দেবে না। পণ্য সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থাকে তা বহন করতে হবে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে এদিন সকালে সংবাদ সম্মেলন করে ওষুধ শিল্প সমিতি জানায়, দেশের শীর্ষ ৪৫টি ওষুধ কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সংকট এড়াতে সরকারের কাছে ১৪টি প্রস্তাব তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে-আগুনে পুড়ে যাওয়া যেসব পণ্যের শুল্ক, ডিউটি ট্যাক্স ও ভ্যাট এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে- তা আমদানিকারকদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এছাড়া পুড়ে যাওয়া পণ্যের এলসি সংক্রান্ত সব ব্যাংক চার্জ, সুদ মওকুফ করা।

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান গণমাধ্যমকে বলেন, আইনের বিধি-বিধান যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করে আইনানুগ কার্যক্রম নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন
অক্ষত মালামালের তালিকা টানিয়েছে বিমান, খুঁজছেন মালিকেরা
শাহজালালে আগুনে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির শঙ্কা, উদ্বেগ ব্যবসায়ীদের

এ বিষয়ে কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর ২৮ ধারায় স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১. যদি কোনো পণ্যের মালিক আবেদন করেন এবং সহকারী কমিশনার বা তার উপরের পদের কোনো কর্মকর্তা প্রথমবার পরীক্ষার সময় নিশ্চিত হন যে, (ক) পণ্যটি নামানোর সময় বা তার আগেই নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথবা, (খ) পণ্য নামানোর পর, কিন্তু পরীক্ষার আগে কোনো দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়েছে, যেখানে মালিক বা তার প্রতিনিধির কোনো ভুল বা অবহেলা ছিল না।

২. যদি কোনো পণ্যের মালিক লিখিত আবেদন করেন এবং কাস্টমস কমিশনার এই বিষয়ে নিশ্চিত হন যে, পণ্যটি আমদানি করার পর কিন্তু দেশের ভেতরে ব্যবহারের জন্য খালাসের আগে কোনো দুর্ঘটনা বা দৈব দুর্বিপাকে ক্ষতিগ্রস্ত, নিখোঁজ বা নষ্ট হয়ে গেছে- তাহলে পণ্যের মালিককে ক্ষতির প্রমাণসহ আবেদন করতে হবে। এরপর কমিশনার একজন কর্মকর্তাকে পণ্যের নতুন মূল্য নির্ধারণের অনুমতি দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য যতটুকু কমেছে, সেই অনুপাতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে অথবা আগেই পরিশোধ করা হয়ে থাকলে তা ফেরত দেওয়া হবে।

৩. যদি কাস্টমস কমিশনার নিশ্চিত হন যে, গুদামে (ওয়্যারহাউসে) রাখা কোনো পণ্য দেশের ভেতরে ব্যবহারের জন্য খালাসের আগে কোনো দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- তাহলে মালিককে ক্ষতির প্রমাণসহ আবেদন করতে হবে। এরপর কমিশনার একজন কর্মকর্তাকে পণ্যের নতুন মূল্য নির্ধারণের অনুমতি দিতে পারবেন এবং পণ্যের মূল্য যতটুকু কমেছে, সেই অনুপাতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, যেসব পণ্যের শুল্ক পরিশোধের পর কিন্তু খালাসের আগে পুড়ে গেছে, এনবিআর সেই শুল্ক ও কর ফেরত দিতে বাধ্য।

গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে আগুন লাগে। ওইদিন রাত ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় ২৭ ঘণ্টা পর রোববার বিকালে। ওই অগ্নিকাণ্ডে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোশিয়েশন অব বাংলাদেশ।

এসএম/কেএসআর/এএসএম

Read Entire Article