চলতি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তিতে দ্বিতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেশের ৪১৩টি কলেজ ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীও পাননি। এছাড়া ১০টি কলেজে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য পছন্দক্রম (চয়েজ) দেননি।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. রিজাউল হকও জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছর সারাদেশের ৮ হাজার ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (কলেজ ও আলিম মাদরাসা) একাদশ শ্রেণিতে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি করানো হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১৩টিতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীও পাওয়া যায়নি। আবার ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ ভর্তির জন্য আগ্রহ দেখাননি। সেখানে কেউ পছন্দক্রম দেননি।
ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ও একাদশে ভর্তির কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অধ্যাপক রিজাউল হক বলেন, প্রথম ধাপে একজন শিক্ষার্থীও ভর্তির জন্য না পাওয়া কলেজের সংখ্যা ছিল ৩৭৮টি। দ্বিতীয় ধাপে এসে সেটা বেড়েছে। নতুন করে আরও যে ৩৫টি কলেজ ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থী পায়নি, তারা প্রথম ধাপে কিছু শিক্ষার্থী পেয়েছিল। তবে সেসব শিক্ষার্থীরা মাইগ্রেশন করে অন্য কলেজে চলে গেছেন।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে এসে শিক্ষার্থী না পাওয়া কলেজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১৩টি। আমাদের সামনে আরও একটি ধাপ রয়েছে। তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হবে। এখনো যেসব শিক্ষার্থী আবেদন করেননি বা কোনো কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হননি, তারা এ ধাপে আবেদন করবেন। আশা করি, শিক্ষার্থীরা মেধাক্রম অনুযায়ী তাদের পছন্দের কলেজ পাবেন।
ফল বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করেও কলেজ পাননি ১০ হাজার ৮২৬ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে এসএসসিতে জিপি-৫ পাওয়া এক হাজার ৪১৮ জন রয়েছেন।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রাতে প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়। ওই ধাপে মোট ২৫ হাজার ৩৪৮ জন শিক্ষার্থী কোনো কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি। এর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছিল ৫ হাজার ৭৬৫ জন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে ভর্তি কমিটির দেওয়া তথ্যমতে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করা ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কলেজ পেয়েছেন। বাকি ১ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনো কলেজ পাননি। দেশের বৈধ ৯৫ শতাংশ কলেজই শিক্ষার্থী পেয়েছেন। বাকি ৫ শতাংশ কলেজে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হননি।
এছাড়া প্রথম ধাপ শেষে ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী মাইগ্রেশন করে নতুন কলেজ পেয়েছেন। ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মাইগ্রেশনের আবেদন করেও তাতে সফল হননি।
দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিতদের যা করণীয়
দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করে কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীদের দ্রুত কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমেই তাদের ৩৩৫ টাকা ফি পরিশোধ করে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। ফি পরিশোধ করতে অসুবিধা হলে সরাসরি বিকাশের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ফি দিয়েও নিশ্চায়ন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
কেউ যদি দ্বিতীয় ধাপেও কাঙ্ক্ষিত কলেজ না পান, সে ক্ষেত্রেও তাকে প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। কারণ দ্বিতীয় ধাপে আবেদন শুরুর আগে পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে। সেখানে তারা পছন্দের কলেজ পেতে পারেন।
কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের করণীয়
প্রথম ধাপে আবেদন করে যারা কলেজ পাননি, তাদের জন্য কী করণীয় তাও জানিয়েছে একাদশে ভর্তি কমিটি ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির জাগো নিউজকে বলেন, এসব শিক্ষার্থীর আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৃতীয় ধাপে চলে যাবে। এখন শিক্ষার্থীদের শুধু অনলাইন আবেদনে গিয়ে পছন্দক্রমে পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পরামর্শ থাকবে, তারা যেন পছন্দক্রমে নতুন কিছু কলেজ যোগ করেন। তবে আসনের কোনো সংকট নেই। সব শিক্ষার্থীই ভর্তি হতে পারবেন।
এএএইচ/ইএ