‘শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আমাদের সংগ্রাম চলবে’

4 hours ago 5

জাকসুর নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ জিতু বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে যারাই বাধা হয়ে দাঁড়াবে, আমরা সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে’। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের শপথ পাঠ করান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জাকসুর সভাপতি অধ্যাপক কামরুল আহসান। 

আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৩ বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অধিকার বঞ্চিত ছিল। ক্যাম্পাসে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচন হয়েছে কিন্তু জাকসু নির্বাচন হয়নি। সিনেটে শিক্ষার্থীরা নিজেদের কথা বলতে পারেনি। জাকসু কার্যকরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। তবে অতীতের মতো এখনও একটি গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের পথে বাধা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে।’

জাকসু নির্বাচনের কৃতিত্ব ২৪'র গণঅভ্যুত্থানের শহিদ ও আহত যোদ্ধাদের উৎসর্গ করে ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী মাজহারুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে আমাদের বিজয় হয়নি, বরং আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী একবছর কাজ করার পর শিক্ষার্থীরা যদি মনে করে যে আমরা আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি তাহলেই আমরা সন্তুষ্ট হবো। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে বদ্ধপরিকর। আশা করছি শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আগামী এক বছর তাদের অধিকার আদায়ে কাজ করে যেতে পারবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন,‘জাকসু নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চাই এবারের জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। আমাদের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শুরু করে সবকিছু সংরক্ষিত আছে, জাকসু নির্বাচনে নিয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের অনুরোধ করবো ব্যক্তিস্বার্থ বড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান নষ্ট করবেন না। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বচ্ছ নির্বাচনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এবারের জাকসু নির্বাচন।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, ’জাকসু শিক্ষার্থীদের অধিকারের জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে শিক্ষার্থীদের যে অধিকার জাকসু, তা যেন চলমান থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরাই সবকিছু, আমরা শুধু সহায়ক মাত্র।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, ’শিক্ষার্থীরা আশা ভরসা নিয়ে যাদেরকে নির্বাচিত করেছে, জাকসুর নেতৃবৃন্দ সে আশা ভরসা পুরন করবে সে আশা করছে। আমি আশা করি এখন থেকে সকল সমস্যার সমাধান হবে নিয়ম মেনে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি আশা রাখছি তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ২৪ এর গণ অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা। বাংলাদেশে গণতন্ত্র হারিয়ে গিয়েছিল, ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের পুণরুদ্ধার প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম ডাকসু এবং জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হ‌ওয়া মানে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি করা। বাংলাদেশকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার যে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষুদ্র পরিসরে চেষ্টা করেছে সর্বোচ্চ দেয়ার।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা -কর্মচারী ও জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
 

Read Entire Article