শিক্ষার্থীশূন্য সিটি ইউনিভার্সিটি, ক্যাম্পাসে হামলার ক্ষতচিহ্ন

2 hours ago 5

শিক্ষার্থীদের কোলাহলে মুখর থাকা সিটি ইউনিভার্সিটি এখন নীরব ও শূন্য। একসময়ের প্রাণচঞ্চল ক্যাম্পাসজুড়ে এখন ছড়িয়ে আছে ভাঙচুর ও আগুনে পোড়া ধ্বংসস্তূপের নিঃশব্দ সাক্ষ্য। পুড়ে যাওয়া তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেট কার, ভাঙা জানালার কাচ, উপাচার্যের কার্যালয়সহ প্রশাসনিক ভবনের আসবাবের ভাঙা টুকরো—সবই যেন রোববার রাতের সংঘর্ষের নির্মমতার প্রমাণ বহন করছে।

গত রোববার (২৬ অক্টোবর) রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত আশুলিয়ার খাগান এলাকায় বেসরকারি সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর দিনভর আতঙ্কে কাটে স্থানীয়দের সময়। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকেই সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নির্দেশে হল ছাড়তে শুরু করেন। সন্ধ্যার মধ্যেই হল পুরোপুরি খালি হয়ে যায়।

নিরাপত্তারক্ষী দরবেশ বলেন, ‘গতকালই সবাই চলে গেছে। এখন হল খালি। আমরা একটু ভয়ের মধ্যেই আছি।’

এদিকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন ও থানায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সিটি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘হামলাকারীদের আচরণ শিক্ষার্থীসুলভ ছিল না। তারা আমার কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সব অফিসে হামলা চালিয়েছে, লুটপাট করেছে, গাড়িগুলোতে আগুন দিয়েছে। আমরা থানায় মামলা করব এবং ইউজিসিতে লিখিত অভিযোগ জানাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো সমস্যার সমাধান ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যদি ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ আলোচনায় আসে ও আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়, তবে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করব।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, হামলায় তিনটি বাস, দুটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেলসহ প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। উপাচার্যের কক্ষও রেহাই পায়নি।

প্রসঙ্গত, গত রোববার (২৬ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় উত্তেজনা। একপর্যায়ে তা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। ভোররাত পর্যন্ত থামেনি সেই তাণ্ডব। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসজুড়ে এখনও শঙ্কার ছায়া। শিক্ষার্থীশূন্য ক্যাম্পাসের নিস্তব্ধতা যেন বলছে—আতঙ্ক এখনো কাটেনি।

Read Entire Article