দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি ও শিল্প কারখানার নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনের নেতা ও বিজিএমইএ নেতাদের মধ্যে মতবিনিময় সভা হয়েছে। এতে পোশাকশিল্পসহ সব শিল্প কারখানায় বিরাজমান পরিস্থিতি, শিল্পে নিরাপত্তহীনতা, প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়া এবং ব্যাংক সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনায়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পোশাক শিল্পসহ সব শিল্পখাতের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে মাহমুদ জিন্স কারখানার ডিএমডির ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা বলেন, এতে করে দেশের সামগ্রিক শিল্পখাতে গভীর উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে উদ্যোক্তারা কারখানা পরিচালনায় নিরুৎসাহিত হবেন। একই সঙ্গে দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগও ঝুঁকিতে পড়বে, যা মোটেও কাম্য নয়।
অর্থনীতি ও শিল্পের স্বার্থে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে, কর্মংস্থান সুরক্ষিত রাখতে শিল্পাঞ্চলগুলোতে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা প্রয়োজন। পোশাক শিল্পসহ সব শিল্প ও কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবসায়ী নেতারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
মতবিনিময় সভায় বলা হয় যে, খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়ম বেসরকারি খাতবিরোধী পদক্ষেপ। এতে বিনিয়োগ ব্যাহত হবে। কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়বে। সব মিলিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব পড়বে।
- আরও পড়ুন
ব্যবসায় মন্দা, বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দিতে চান কলকাতার ব্যবসায়ীরা
চামচা পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটায় অগণতান্ত্রিক মনোভাব তৈরি হয়েছে
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এপ্রিল মাস থেকে খেলাপি ঋণের নতুন নীতি কার্যকর হলে তৈরিপোশাক খাতে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। নতুন নীতি শিল্পগুলোতে সম্ভাব্য কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিরূপনে খাতভিত্তিক স্টাডি করার বিষয়ে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নেতারা একমত পোষণ করেন।
সভায় ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়েও বিশেষভাবে আলোচনা হয়। বলা হয় যে, এলডিসি তালিকা থেকে বের হলে বাংলাদেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু বাণিজ্য ও অন্যান্য সুবিধা হারাবে। বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগী সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণে আরও কিছুটা সময় দরকার। সেক্ষেত্রে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময়সীমা ৩-৬ বছরের জন্য পেছানো যেতে পারে বলে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর নেতারা মত প্রকাশ করেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, বিইএফ সভাপতি আরদাশির কবির, বিকেএমইএ সভাপতি মোহম্মদ হাতেম, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ), এমসিসিআই সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, ডিসিসিআই সাবেক সভাপতি ওসামা তাসীর, বিজিএপিএমইএ সভাপতি মো. শাহরিয়ার, বায়লা সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম ও ১ম সহ-সভাপতি হাসিন আরমান প্রমুখ।
কেএসআর/জেআইএম