শিশু নির্যাতন মামলায় ন্যায়বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
গৃহকর্মী শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা তৈরিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কর্মরত সংস্থাগুলো এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই চান্দগাঁও থানায় এনজিওকর্মী মাহাবুব আলম প্রকাশ মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া নারী ও শিশু নির্যাতন মামলাসহ সব মামলার ন্যায়বিচারের দাবি করা হয়।
অপরাজেয় বাংলাদেশের সাবেক বিভাগীয় সমন্বয়কারী ও বিশিষ্ট শিশু উন্নয়ন সংগঠক মাহাবুবুল আলমের পরিচালনায় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে বক্তব্য দেন শিশু উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংগঠন স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী শিকদার, যুব উন্নয়ন সংগঠন বিশ্বাস যুব উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী শফিউল বশর ও ঘাসফুলের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর সিরাজুল ইসলাম।
এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন- শিশু অধিকার ভিত্তিক জাতীয় সংগঠন অপরাজেয় বাংলাদেশের চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী জিনাত আরা বেগম, যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর দিপিকা দাশ গুপ্ত, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরাম (বিবিএফ) প্রকল্প সমন্বকারী আফতাফুজ্জামান, ঊষা নারী উন্নয়ন সংস্থার প্রোগ্রাম ম্যানেজার পীযুশ দাশ গুপ্ত, ইপসার প্রচারাভিয়ান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সমন্বয়কারী ফারাহ আমেনা খাতুন, গণমাধ্যমকর্মী শিহাব জিসান প্রমুখ।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, বিচারহীনতার কারণে অপরাধীরা বারবার একই কাজ করার সাহস পায়। যদি প্রতিটি ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হতো, তাহলে আর কেউ গৃহশ্রমিকদের নির্যাতনের সাহস দেখাত না। পাশাপাশি এ মানববন্ধনে শিশু নির্যাতনকারী ও গৃহকর্মী শিশু ধর্ষণকারী এনজিও কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমানের শিশু নির্যাতন মামলাসহ সব শিশু নির্যাতন মামলার ন্যায়বিচার দাবি করা হয়। সরকারি হটলাইন ১০৯৮-এর মাধ্যমে প্রাপ্ত শিশু গৃহকর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে যেসব মামলা হয়েছে, তার সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে এ মানববন্ধনে আহ্বান জানানো হয়।
এখানে উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই হটলাইনে কল পেয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও চান্দগাঁও থানা পুলিশ ওই এনজিও কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমানের ঘর থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় গৃহকর্মী শিশুকে উদ্ধার করে। পরে শিশু গৃহকর্মীর হটলাইন ১০৯৮ এবং থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, পত্রিকায় সব খবর আসে না। বিশেষ করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী বা তাদের পরিবারের সদস্যদের চাপে অনেক ধর্ষণের তথ্য চাপা পড়ে যায়। কোনো কোনো ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ালেও আইনের ফাঁক গলে সত্যিকারের অপরাধী পার পেয়ে যায়।
এ সময় মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, ধর্ষণের কিছু কিছু মামলায় আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খাটে। কিন্তু পরে জামিনে বের হয়ে এসে ভুক্তভোগীর দারিদ্র্যকে পুঁজি করে হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করায় বা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে। এতে অন্য অপরাধীরা সাহস পেয়ে যায়।