শিশুদের জীবন বাঁচাতে নদীতে বিনামূল্যে সাঁতার শেখান নজরুল

2 hours ago 4

সবচেয়ে জনপ্রিয় শরীরচর্চার মধ্যে একটি হচ্ছে সাঁতার। সাঁতারে শরীরের একাধিক পেশি একসঙ্গে কাজ করে। ফলে নানা ধরনের ব্যথা, যন্ত্রণায় আরাম দিতে পারে সাঁতার। নিয়মিত সাঁতারে হৃদপেশির কার্যক্ষমতা বাড়ে, সেই সঙ্গে বাড়ে ফুসফুসের অক্সিজেন ধারণক্ষমতা। 

শুধু শারীরিক সুবিধা নয় বরং জীবনের নিরাপত্তার জন্য দরকার সাঁতার শেখা। শিশুদের আত্মবিশ্বাস ও মানসিক বিকাশে সাঁতার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। নদীবেষ্টিত কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শিশু-কিশোররা ঝুঁকি নিয়েই নেমে পড়ে নদী, খালবিল ও পুকুরে। ভৈরবে প্রতি বছর অনেক শিশু-কিশোর সাঁতার না জানার কারণে নদী ও পুকুরে পড়ে মারা যান।

শিশু-কিশোরদের এসব ঝুঁকি থেকে বাঁচতে বিনামূল্যে সাঁতার শিখিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের নজরুল ইসলাম। নিজ উদ্যোগ ও বিনা পারিশ্রমিকে মেঘনা নদীতে প্রায় ১০০ জনকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। 

জানা গেছে, পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু ঠেকাতে সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেন নজরুল। ভৈরব পৌর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদীতে প্রশিক্ষণ দেন তিনি। কয়েক বছর ধরে বিনামূল্যে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত লালপুর ঘাট এলাকায় সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ভৈরব ফ্রি সুইমিং ক্লাব থেকে এখন পর্যন্ত ১০০ জন সাঁতার শিখেছে। বর্তমান ৫০ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়ছে।

ভৈরব সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক বি এম ই কাঞ্চন বলেন, রক্ত সৈনিক নজরুল ইসলাম শুধু একজন সাঁতার প্রশিক্ষক নন, তিনি সমাজের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। শিশুদের সাঁতার শেখার জন্য কোনো সুইমিংপুল নেই। সরকারি অথবা বেসরকারি পর্যায়ে একটি সুইমিংপুলের কার্যকর ব্যবস্থা নিলে মৃত্যুহার অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। সকল অভিভাবকদের বলব, আপনার সন্তানকে সাঁতার শেখান।

ফ্রি সুইমিংপুলের কর্ণধার কোচ নজরুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি সাঁতারের প্রতি আগ্রহী ছিলাম। সেই চিন্তা থেকে আমি সম্পূর্ণ নিরাপত্তা গ্রহণ করেই সাঁতার শেখাই। ভৈরবে কোনো সুইমিংপুল নেই, সরকারি অথবা বেসরকারি পর্যায়ে একটি সুইমিংপুল জরুরি প্রয়োজন। আমার পরিচিত বেশ কয়েকজন পানিতে পড়ে মারা যান। প্রতিবছর বহু শিশু পানিতে পড়ে মারা যান। মানুষকে সচেতন করতে ও দুর্ঘটনারোধে বিনামূল্যে সাঁতার শেখাই।

Read Entire Article