পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় পৃথক তিন মামলা করে দুদক। এ তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে এ শুনানি চলছে। আজ তিন মামলায় আদালতে ৭ সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় দ্বিতীয় দিনে সহকারী পরিচালক ধীরাজ চন্দ্র বর্মণের জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয়েছে। এ মামলায় অন্য ছয় সাক্ষী হলে—দুদকের উপপরিচালক মো. মাহবুবাহ রহমান, সহকারী পরিচালক অসীমশীল, উল্লাস চৌধুরী, ধীরাজ চন্দ্র বর্মণ, সৌরভ দাস, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান এবং একই মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী শফিকুল ইসলাম।
এসব মামলায় প্রথম দিনে দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসান সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম এসব তথ্য জানান।
এর আগে গত ৩১ জুলাই একই আদালত এ তিন মামলায় চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরও আগে গত ২০ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এসব মামলা বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
এদিকে তিন মামলার মধ্যে শেখ হাসিনাসহ আসামি ১২ জন, আরেক মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ এবং অন্য মামলায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জন আসামি রয়েছেন। তারা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার ছেলেমেয়ে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের নামে প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০০৯) বরাদ্দ পেয়েছেন। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট তার নামে রাজউক প্লটের বরাদ্দপত্র দেয়। সজীব ওয়াজেদ জয় (প্লট নম্বর ০১৫) এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও (প্লট নম্বর ০১৭) ১০ কাঠা করে প্লট পেয়েছেন। জয়ের বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর দেওয়া হয় এবং ১০ নভেম্বর মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। পুতুলের বরাদ্দপত্র দেওয়া হয় ওই বছরের ২ নভেম্বর।