বরগুনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাইয়ের পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভারত মুখ্যমন্ত্রী বলে সম্বোধন করতো। এরপরও কি আপনারা বোঝেন নাই আসলে ভারত কী চায়?
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র বরগুনা জেলার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, বিগত ৫৩ বছর স্বাধীনতার পর যারা দেশ পরিচালনা করেছে তাদের মাধ্যমে দেশের কল্যাণ, মানুষের কল্যাণ আমরা দেখিনি। হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মায়ের কোল সন্তানহারা হয়েছে। ৫৩ বছরে দুনিয়ার ভেতরে একবার দুইবার নয় দেশটা চোরের দিক থেকে পাঁচবার ফার্স্ট হয়েছে। এর পরিবর্তন আমাদেরকেই করতে হবে। সে হিসেবে আমি বলবো, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে যাদের ক্ষমতায় দেশ পরিচালনা দেখেছি, তারা আবার ক্ষমতায় আসার পর নতুন আর কোনো ভালো কিছু পাওয়ার আশা একটা অবাস্তব কথা। এজন্যই এর পরিবর্তন আমাদেরকেই করতে হবে।
আন্দোলন পরবর্তী দেশের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর দেশের ভেতরে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে আমি সারাদেশে সফর করার পর এটাই মনে হয়েছে এখন মানুষ পরিবর্তন চায়। যেই পরিবর্তনটা হলো ইসলামের পক্ষে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী হয় শেখ হাসিনা, তখন সে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতে গিয়েছিল। ভারতে যাওয়ার পর তার মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছিল। মুসলমানের মাথায় সিঁদুর পরাবে, এটা আমাদের একটি আলোচনা পর্যালোচনার বিষয় ছিল। এরপর আমরা কী দেখলাম? আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, তাকে তারা সম্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী। সিকিমসহ বিভিন্ন স্বাধীন রাষ্ট্রগুলো তারা বিভিন্ন পর্যায়ে দখল করে নিয়েছিল। এখন তারা কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্র নেই। তারা এখন ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর যখন আমাদের দেশে স্বাধীনতা উদযাপন করি, ভারতও করে। নরেন্দ্র মোদিও সেদিন বলেছিল, কিন্তু তারা কি সেদিন বলেছে যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তারা বলেছে, ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ হয়েছে এবং সেই যুদ্ধে ভারত বিজয়লাভ করেছে। এরপরও কি আপনারা বোঝেন না যে ভারত কী চায়?
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, এই দেশে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি, এই দেশ আমার দেশ। এ দেশ নিয়ে কেউ ছিনিমিনি করবে এটা কখনোই সহ্য করা যাবে না। ৫৩ বছরের স্বাধীনতায় যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে তাতে এককভাবে দল ক্ষমতায় যায়। যাওয়ার পর ফ্যাসিস্ট চরিত্র হয়, খুনি হয়, পাপাচারকারী হয়। এর পরিবর্তন আমাদেরকেই করতে হবে। সে লক্ষ্যে আমরা বলছি, ৯১টির মতো দেশে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে। প্রতিটি ভোটারের মূল্যায়ন হবে ছোট থেকে সব দলের সম্পৃক্ততায়। যখন সব প্রতিনিধি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবে তখন আর ফ্যাসিস্ট চরিত্র একদমই থাকতে পারবে না। এটাই আমাদের দাবি।
নুরুল আহাদ অনিক/এফএ/জেআইএম