রাজধানীর পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আরও ২২ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এসব মামলায় শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি আসামি হিসেবে রয়েছেন।
রোববার (৯ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক ও দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থার ২২ কর্মকর্তা-কর্মচারী সাক্ষ্য দেন।
প্রথম মামলায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আটজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন—গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জাকিরুল ইসলাম খান, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর জাকির হোসেন, রাজউকের গুলশান জোনের সাবেক উপসচিব তানজিল্লুর রহমান, ঢাকার সদর রেকর্ড রুমের সাব রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান, কালিয়াকৈর থানার সাবেক সাব রেজিস্ট্রার সোহেল রানা, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ ও অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন।
আদালত এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৬ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
দ্বিতীয় মামলায় আজমিনা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন—গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জাকিরুল ইসলাম খান, রাজউকের সাবেক উপসচিব তানজিল্লুর রহমান, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর জাকির হোসেন, দুদকের কনস্টেবল আজহারুল ইসলাম, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, গাজী সিপন ইসলাম ও ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন।
আদালত এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
তৃতীয় মামলায় রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন—মনির হোসেন, অগ্রণী ব্যাংক রাজউক ভবন শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক লায়লা নুর বেগম, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর জাকির হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জাকিরুল ইসলাম খান, রাজউকের সাবেক উপসচিব তানজিল্লুর রহমান ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান।
আদালত এই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৫ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করে দুদক।
প্রথম মামলাটি করে দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। এতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে তদন্ত কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া।
দ্বিতীয় মামলাটি করেন আফনান জান্নাত কেয়া। এতে শেখ হাসিনা, টিউলিপ রিজওয়ানা ও আজমিনা সিদ্দিকসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
তৃতীয় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস. এম. রাশেদুল হাসান। এতে শেখ হাসিনা ও টিউলিপ রিজওয়ানাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
তিন মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
এছাড়া রয়েছেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন ও শহিদ উল্লাহ খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক পরিচালক নুরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম ও ফারিয়া সুলতানা, পরিচালক শেখ শহিদুল ইসলাম এবং মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (ইঞ্জি.)।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এমডিএএ/এমকেআর

16 hours ago
10









English (US) ·