বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আয়োজনে ফ্যাসিবাদবিরোধী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল আজ। ফ্রেমেবন্দি ৩৬ জুলাই: অভ্যুত্থানের পূর্বাপর শীর্ষক এই প্রদর্শনী সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হয়। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে রক্তাক্ত জুলাই আন্দোলন ও শহীদদের আত্মত্যাগের গল্প, গণঅভ্যুত্থানের পরিণতি এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রদের সাহসী সংগ্রাম তুলে ধরা হয়।
এর আগে গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী। প্রদর্শনী জাতীয় জাদুঘরের হলে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ৩৬ জুলাই আন্দোলনের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি হয়ে ওঠে।
সমাপনী দিনে প্রদর্শনী দেখতে আসেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘রক্ত গরম, মাথা ঠান্ডা’-এমন সাহসী ও প্রেরণাদায়ক স্লোগান ধারণ করে যারা নিজেদের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে ময়দানে নেমেছিল, তাদের সে সাহসী সন্তানদের যারা আমাদের অগণিত মা-বাবার বুকের টুকরোদের গুলি করে হত্যা করেছে। যারা গণহত্যা সংঘটিত করেছে, সেই সব হায়েনাদের এই বাংলার মাটিতে বিচার হবে, বিচার হতেই হবে। সে যে মাপেরই হায়েনা হোক, পালিয়ে যাওয়া, লুকিয়ে থাকা কিংবা বন্দি থাকা হোক সবারই বিচার হবে। এটা বর্তমান সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ইতিহাস হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। ইতিহাস সামনে আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে বীরের জন্ম হয় এ দেশে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৫ আগস্ট যে বিজয় দেখেছে গোটা জাতি, দলমত নির্বিশেষে তা সবাইকে হৃদয়ে লালন করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন
- শহীদ-আহতদের ত্যাগের স্বীকৃতি দিতে অনেকেরই দ্বিধা: শিবির সভাপতি
- চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে: জামায়াত আমির
এই আয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সামাজিক আন্দোলনের নেতা এবং ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আমির আব্দুল জব্বার, ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, হাফেজ রাশেদুল, বাংলাদেশ ইনকিলাব পার্টির আহ্বায়ক আহম্মেদ শাকিলসহ (এম.এ) অন্য রাজনৈতিক নেতারা।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, আবু বাকের মজুমদার, হাসিব আল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও সহ-সম্বয়ক, জাগপা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি খালেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোল্যা রহমাতুল্লাহ্ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সেক্রেটারি, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের (এলডিপি) কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি কামরুল হাসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি কে এম ইমরান হুসাইন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের (নুর) ঢাবির নেতা, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের (ইরান) কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি আসিক আল আবিদসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমরা আশা করি এই প্রদর্শনী দেশবাসীকে ৩৬ জুলাই আন্দোলনের ত্যাগ ও আত্মত্যাগের ইতিহাস পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। আগামীতে এই অনুপ্রেরণা নিয়ে আমরা যেন সব সময় সব ধরনের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারি।
এএএম/এমআইএইচএস/এমএস