দুই কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে ফের দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই দাম কমার তালিকয় নাম লেখায় বেশি প্রতিষ্ঠান। তার আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও দাম কমার তালিকায় নাম লেখায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় কার্যদিবসে দাম বাড়ার তালিকায় ছিল বেশি প্রতিষ্ঠান।
যার প্রেক্ষিতে পতন থেকে বেরিয়ে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এমন আশা করতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের সেই আশা বাস্তব হয়নি। ফের দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
অবশ্য বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
কিন্তু শেষ দেড় ঘণ্টার লেনদেনে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়ালে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে বড় হয় দাম কমার তালিকা। অবশ্য তারপরও প্রধান মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৩৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে নেমে গেছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৭৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৩১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ই-জেনারেশনের ৯ কোটি ৪৫ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, আইসিবি, ড্রাগন সোয়েটার, অগ্নি সিস্টেম এবং গ্রামীণফোন।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১১টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস