সংসার চালাতে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করছেন ক্রিকেটার নাসুমের বাবা

4 hours ago 4

এ যেন ‘বাতির নিচে অন্ধকার’। ছেলে দেশের তারকা ক্রিকেটার। আর সংসার চালাতে মাত্র ৮ হাজার টাকা বেতনের নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করেন বাবা।

অথচও ছেলের স্বপ্ন পূরণ করতে রিকশা চালানো থেকে শুরু করে সবজি বিক্রি ও রংমিস্ত্রির কাজও করেছেন সেই বাবা। কিন্তু সেই ছেলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় হয়ে বিয়ে করার পর সম্পর্ক অনেকটা বিচ্ছিন্ন করেই দিয়েছে।

সেই বাবার নাম আক্কাস আলী। ছেলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। চার বছরেরও বেশি সময় ধরে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকায় জীবিকার তাগিদেই তিনি সিলেট নগরীর হাউজিং এস্টেটে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। মাস শেষে বেতন পান মাত্র ৮ হাজার টাকা।

অথচ নিজের ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রমের ফলে ছেলে এখন দেশের নামকরা ক্রিকেট তারকা। স্ত্রীসহ থাকছেন ঢাকায় বিলাসবহুল বাড়িতে। অবশ্য এতে আক্কাস আলীর কোনো আক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি একজন বাবা হিসেবে শুধু চাই নাসুম বড় কিছু হোক। নিজের জন্য আলাদা কিছু চাইনি, চাই না।’

স্থানীয়দের ভাষ্য, একসময় নাসুমের পরিবারের সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকলেও বিয়ের পর থেকে দূরত্ব তৈরি হয়। যে বাবা রিকশা চালানো, সবজি বিক্রি আর রঙের কাজ করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়ে জাতীয় দলে পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি আজ ছেলে থেকে আলাদা।

নাসুমের চাচা লুবন মিয়া বলেন, ‘আমাদের ভাতিজা খুব আদরের ছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকে ওর এমন পরিবর্তন কেন হলো, সেটা বুঝতে পারছি না।’

জালাবাবাদ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নাসুমের বাবা অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাকে বড় করেছেন। জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার পর মা মারা গেলে সে বাবার থেকে আলাদা হয়ে যায়। তবে কেন এমন হলো, সেটা কেউই বলতে পারছে না।’

নাসুম অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি তার দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় দলের এই বাঁহাতি স্পিনার বলেন, ‘আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। উনি আমাদের সঙ্গে থাকেন না। তাই আলাদাভাবে থাকেন। মাসে মাসে আমি টাকার একটা অ্যামাউন্ট দেই। তবে উনি কী করবেন, সেটা ওনার সিদ্ধান্ত।’

উল্লেখ্য, ক্যারিয়ারের শুরুতেই নাসুম জন্মস্থান নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। একসময় তাকে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের সন্তান হিসেবে প্রচারণা চালানো হলেও তিনি নিজেকে সিলেট জেলার ক্রিকেটার দাবি করেন এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

জেএএইচ/আহমেদ জামিল/এমএমআর/জেআইএম

Read Entire Article