বিপিএলের প্রথম পর্বের রোমাঞ্চ শেষ হলেও বিতর্কের রেশ কাটছে না। এবার আলোচনার কেন্দ্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ ও বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম। বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন ফাহিম, যা তাকে বোর্ড থেকে সরে যাওয়ার ভাবনাতেও ঠেলে দিয়েছে।
দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাহিম নিশ্চিত করেছেন, বিসিবি সভাপতির একটি মন্তব্য তাকে ভীষণ হতাশ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি মন্তব্যটি স্পষ্টভাবে বলতে চাই না, তবে এটা আমাকে দারুণভাবে অবাক করেছে। এমন মন্তব্য একেবারেই আশা করিনি, বিশেষ করে যেহেতু সেটি অনেক মানুষের সামনে করা হয়েছিল, যেখানে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের লোকজনও ছিলেন।’
বোর্ডে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন ফাহিম। তিনি মনে করেন, বোর্ডের বাইরে থেকে কাজ করার স্বাধীনতা হয়তো বেশি, যা বোর্ডের ভেতরে থেকে সম্ভব নয়।
‘মাঝেমধ্যে মনে হয় বোর্ডের বাইরে থাকাই ভালো। কারণ বাইরে থেকে আমি অনেক কিছু বলতে ও করতে পারি, যা বোর্ডে থেকে করা সম্ভব নয়। যদি আমি বোর্ডে থাকি, তাহলে কাজ করতে হবে। কিন্তু যদি কাজ করতে না পারি, তাহলে বাইরে থাকাই ভালো।’
ফাহিমের মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বিসিবি নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। বিপিএলের টিকিট সংকট নিয়ে দর্শকদের বিক্ষোভ, গেট ভাঙচুর, আগুন দেওয়া এসব ঘটনায় ইতোমধ্যেই বোর্ডের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এছাড়া, বিপিএলের উদ্বোধনী পর্বেই প্রেসিডেন্সিয়াল বক্সে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার অসদাচরণ নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ফাহিম বোর্ডের ভেতরে কাজ করার স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, যেকোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ থাকতে হয়। তবে বিসিবিতে সেই স্বাধীনতা তিনি পাচ্ছেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে কোচ ও সংগঠক হিসেবে কাজ করা নাজমুল আবেদিন ফাহিম তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানসহ অনেক ক্রিকেটারের গুরু হিসেবে পরিচিত। তার মতো একজন অভিজ্ঞ সংগঠকের এমন মনোভাব বোর্ডের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিপিএলের অব্যবস্থাপনা, টিকিট বিতরণ নিয়ে বিশৃঙ্খলা এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফলে বিসিবির ভাবমূর্তি ইতিমধ্যেই চাপে পড়েছে। এর মধ্যে ফাহিমের বোর্ড ছাড়ার ইঙ্গিত নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
বোর্ড পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বিসিবির জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোর্ড কি সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেবে, নাকি আরও বিতর্কে জড়াবে? সময়ই বলে দেবে।