রান্নার তেল শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের ওপরও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে তেলের সঠিক নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি।
অনেকেই জানেন না, রান্নার জন্য ব্যবহৃত তেল শরীরে কীভাবে কোষের গঠন, হরমোন ভারসাম্য ও প্রদাহের মাত্রা প্রভাবিত করতে পারে। এ বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন আল্-হায়াত হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কনসালটেন্ট ডায়টেসিয়ান ও পুষ্টিবিদ মোহাম্মদ আরিফ ইকবাল।

তিনি বলেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে সবচেয়ে উপকারী তেল হিসেবে অলিভ অয়েল ও সরিষার তেলকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। অলিভ অয়েলে থাকে প্রচুর পরিমাণে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই ও পলিফেনল, যা শরীরের কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বৃদ্ধি ধীর করে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, অলিভ অয়েল নিয়মিত ব্যবহার স্তন, কোলন ও ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে, সরিষার তেলে থাকা অ্যালাইল আইসোথায়োসায়ানেট যৌগ ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি দমন করে এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করতে সহায়তা করে। এই তেল বিশেষ করে ফুসফুস, পাকস্থলী ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। সরিষার তেল অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটরি বা প্রদাহনাশক হিসেবেও কাজ করে, যা দীর্ঘমেয়াদে কোষকে সুরক্ষিত রাখে।

তবে সয়াবিন তেলও একেবারে খারাপ নয়। এতে রয়েছে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায় এবং শরীরের ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু একে উচ্চ তাপে বেশি সময় ধরে ব্যবহার করলে তেলের গঠন ভেঙে ট্রান্সফ্যাট তৈরি হতে পারে, যা কোষে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যেকোনো তেলই সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। অতিরিক্ত তেল শরীরের ক্যালরির ভারসাম্য নষ্ট করে ওজন বৃদ্ধি, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এমনকি হরমোনজনিত ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

তাই রান্নায় এক ধরনের তেল না ব্যবহার করে অলিভ, সরিষা ও সয়াবিন তেল পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করলে শরীর পাবে সবধরনের পুষ্টি ও সুরক্ষা।
সূত্র: হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ, আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি, এবং জার্নাল অব নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট্রি
এএমপি/এমএস

1 hour ago
5









English (US) ·