গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করে এই সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য পতিত ফ্যাসিস্টরা নানান ষড়যন্ত্র করছে। ছাত্র-শ্রমিকের রক্ত দিয়ে যে অভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছে তার ওপরে দাঁড়িয়ে আছে একটি অন্তর্বর্তী সরকার। তারা এই দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু এই পতিত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দেশি ও বিদেশি দোসররা বসে নেই।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে গণসংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণসংলাপ’ শিরোনামে এ গণসংলাপের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলনের রংপুর জেলা শাখা।
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কার যাতে করে মুসলিম সম্প্রদায় খেপে ওঠে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে। সেই ছবি ও ভিডিও পশ্চিমা বিশ্ব আমেরিকাকে দেখাতে পারেন। তারা মনে করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেছেন তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্ধার করবেন। শেখ হাসিনা তাদের নেতাকর্মীদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করতে বলেছেন যাতে তাদের ওপর হামলা করলে সেই ছবি তুলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাঠাতে পারেন। এই হলো তাদের ষড়যন্ত্র।
শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছেন বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এতদিন ধরে শেখ হাসিনা বলত বিরোধীদল নাকি বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু বিদেশিদের পায়ে ধরে ভারতে পালিয়ে গিয়ে শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু বাংলাদেশ আর কখনও ফ্যাসিস্ট শাসনে ফিরে যাবে না। ফ্যাসিস্টরা যেভাবে শাসন চালিয়েছে তার সংবিধান, রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইনকানুন বহাল থাকলে দেশে গণতন্ত্র কায়েম হবে না। আর যেন কেউ ভোটাধিকার কেড়ে নিতে না পারে এ জন্য রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, গণতান্ত্রিক সংবিধান, আইনের সরকার, গণতান্ত্রিক নির্বাচন দরকার।
জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাই-আগস্টের সব হত্যাকাণ্ডের বিচার এ দেশের মাটিতে করতে হবে। গত ১৫ বছর যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে, যত গুম-খুন হয়েছে তার বিচার করতে হবে। ন্যায়বিচার ছাড়া বাংলাদেশ এগোবে না। সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের যথাযথ উদ্যোগ সরকারকে নিতে হবে। ফ্যাসিস্টদের কোনো রাজনৈতিক অধিকার থাকে না। তাদের বিচার না করলে মাফ পেয়ে গিয়ে তারা সমস্ত কিছু লুটেপুটে খাবে এ সুযোগ তাদের দেওয়া হবে না। এ দেশের মাটিতে সকল ফ্যাসিস্টদের বিচার করতে হবে। এটাই অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
রংপুর জেলা গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন দলের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া, দীপক রায়, কৃষক-মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম প্রমুখ।