রেলওয়ের নিয়মকানুন যেন কেবল সাধারণ যাত্রীদের জন্যই। কারণ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জন্য একটি যাত্রীবাহী ট্রেনকে উল্টো পথে ছুটতে হয়েছে প্রায় ৬ কিলোমিটার! আর এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শতাধিক যাত্রী।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে এমনই ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনে।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো পঞ্চগড় থেকে ট্রেনটি যাত্রী নিয়ে পার্বতীপুরের দিকে যাচ্ছিল। ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রী তুলে ট্রেনটি যখন শিবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেছে, তখনই ঘটে বিপত্তি।
ট্রেনচালক জানতে পারেন, ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনে রেলওয়ের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অপেক্ষা করছেন। আর এই ট্রেনেই ফিরবেন। পরে, কর্তাদের নির্দেশ মেনে শিবগঞ্জ থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ উল্টো দিকে যেতে হয় ট্রেনটিকে। অর্থাৎ, গন্তব্যের দিকে যাওয়া ট্রেনটি হঠাৎই পেছনের দিকে ছুটতে শুরু করে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তার নাম আবু হেনা মোস্তফা আলম। তিনি লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন।
এই অস্বাভাবিক ঘটনায় যাত্রীরা প্রথমে অবাক হন। পরে তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। শতশত যাত্রী নির্ধারিত গন্তব্যে সময়মতো পৌঁছাতে পারেননি।
কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ নয়— ট্রেনটি স্টেশনে পৌঁছানোর পর দেখা যায়, কর্মকর্তারা ‘লোকাল ট্রেন’ বলে সেটিতে উঠতে অস্বীকৃতি জানান।
এ ঘটনায় ওই ট্রেনের এক যাত্রী রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কষ্টের কথা চিন্তা না করে ট্রেন উল্টো পথে আনা হলো, আর এখন তারা বলছেন লোকাল ট্রেনে উঠবেন না! এটা কি রেলের নিয়ম?
পুরো ট্রেনজুড়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। যাত্রীরা প্রশ্ন তোলেন— রেলওয়ে কি সাধারণ মানুষের জন্য, নাকি কেবল কর্মকর্তাদের সুবিধার জন্যই?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সহকারী স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, ‘ডিভিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ঠাকুরগাঁওয়ে ছিলেন, তারা ওই ট্রেনে করে যাওয়ার কথা ছিল। পরে কন্ট্রোল রুম থেকে নির্দেশ আসে ট্রেনটিকে ফেরানোর। তবে শেষ পর্যন্ত কর্মকর্তারা ওই ট্রেনে যাননি, অন্য গাড়িতে গেছেন।’
ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

5 hours ago
3









English (US) ·