সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের মৃত্যুতে নেটজুড়ে শোক

3 weeks ago 13

২১ আগস্ট সকাল ১০টায় রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে বের হন সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট বিভুরঞ্জন সরকার। এ ঘটনায় রাত ১০টায় রমনা থানায় নিখোঁজের জিডি করা হয়। পরদিন ২২ আগস্ট বিকেলে মুন্সিগঞ্জে মেঘনা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গণমাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেন অনেকেই।

কাজী নুসরাত শরমীন লিখেছেন, ‘আজ যে ‘শেষ চিঠি’ আপনি লিখেছেন, যা বর্ণনা করেছেন, কেউ কেউ এখন আকাশ থেকে পড়বে। যেন তারা এসব কথা জানতোই না! আমার খুব কান্না পাচ্ছে, বিভু দা। আমার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে। কতজনকে আমি ব্যক্তিগতভাবে লিখেছি, কত অনুরোধ করেছি! কত কত আশ্বাস! আপনি মরে গিয়ে বেঁচে গেলেন, বিভু দা! আপনার স্নেহ কখনো ভুলবো না, বিভু দা।’

ফজলুল হক সৈকত লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ প্রত্যাশা করে কন্যা সরকারি ডাক্তার আর পুত্র হবে বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার; বিভুরঞ্জন সরকারের সে আশা পূরণ হয়েছিল। কিন্তু তারপরও বিভুরঞ্জনের কিছুতেই কিছু হলো না!’

এমি জান্নাত লিখেছেন, ‘‘আমার পেশা আমাকে শিখিয়েছে—সত্য প্রকাশ করা মানে সাহসের সঙ্গে ঝুঁকি নেবার নাম।’ এতটা ঝুঁকি নিয়ে নিলেন বিভু দা! ঘুরেফিরে আপনার প্রাণবন্ত মুখটাই ভাসছে! আমরা ছোটরা যারা আপনার গল্প কিছুটা হলেও আপনার কাছ থেকেই জেনেছি, তারা না হয় অতি তুচ্ছ। কিন্তু কারোরই কি কিছুই করার ছিল না আপনার জন্য? না জানা বা জানা হাজারো বিভু দার গল্প এভাবে বলে গেলেন আপনি!’

মুসতাক মুকুল লিখেছেন, ‘বিভু দা শেষ চিঠিতে প্রকাশ করলেন হাজার সাংবাদিকের মনের কথা। ষাটোর্ধ্ব বিভুদার মাঝে নিজের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি। এই মনোবেদনা ৯৫% সাংবাদিকের।’

অজয় কুমার রায় লিখেছেন, ‘সকাল থেকেই বিভুদার নিখোঁজ সংবাদ দেখেছি; যা দেখে মন ও মেজাজ মোটেও ভালো ছিল না; বিকেলের দিকে বিভুদার মৃত্যু সংবাদ ও খোলা চিঠি দেখছি। সত্যি কথা বলতে এ দেশে সৎ ভাবে জীবনযাপন করা যেন আজন্ম পাপ। সমাজ ও রাষ্ট্রের অভিশাপ। দাদাকে চিনি দীর্ঘদিন ধরেই। ভালোবাসি। শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। তার লেখারও কিছুটা ভক্ত। কিন্তু তার জীবনের বাঁকে বাঁকে যে এত কঠিন সত্য লুকিয়ে ছিল; তা মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জানতে পারলাম। মানুষ মনে হয়, মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের অপ্রিয় সত্যকথন বলে যান। কমবেশি প্রত্যেক মানুষের কিছু যাতনা থাকে। তবে সত্য বলা মানুষের অনেকের থেকে অনেক বেশিই থাকে। বিভুদার প্রতি কীভাবে সম্মান জানাবো, কীভাবে এ শোক ও দ্রোহ হৃদয়ে স্থান দেবো, তা বুঝে উঠতে পারছি না। সবকিছুই যেন এলোমেলো লাগছে। দাদা, ক্ষমা করবেন। আপনি সত্য বুকে লালন করেছেন; সমাজ ও রাষ্ট্র আপনাকে ধারণ করতে পারলো না।’

অচিন্ত্য চয়ন লিখেছেন, ‘আর কতজন ‘বিভূরঞ্জন’কে হারালে গণমাধ্যমের জ্ঞান ফিরবে?’

এসইউ/এএসএম

Read Entire Article