সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় পেছনের কুশীলবদের খোঁজে ৬ সরকারি দপ্তর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কার্যালয়ের বিভিন্ন নথিপত্র তলব করে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে থেকে দপ্তরগুলোর প্রধান বরাবর নথিপত্র তলব করে পৃথক পৃথক চিঠিগুলো পাঠানো হয়েছে। দুদকের ঊর্ধ্বন একজন কর্মকর্তা বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন। দপ্তরগুলো হলো- সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসন অফিস, সিলেটের পুলিশ সুপার কার্যালয়, কোম্পানিগঞ্জ থানা, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কার্যালয়, খনিজ সম্পদ ব্যুরো এবং খনিজ সম্পদ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
দপ্তরগুলোর কাছে যেসব নথিপত্র চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা'র পাথর উত্তোলনকে কেন্দ্র করে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) থেকে যে সকল তদন্ত পরিচালিত হয়েছে তার সত্যায়িত ফটোকপি এবং সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার নাম, বর্তমান পদবী, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সম্বলিত তথ্যাদি।
ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা থেকে আনুমানিক কি পরিমাণ পাথর উত্তোলন বা আত্মসাত করা হয়েছে এবং কি পরিমাণ পাথর পরবর্তীতে সেখানে রাখা হয়েছে, সে সংক্রান্তে তথ্যাদি এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র।
পাথর উত্তোলন বাবদ রাষ্ট্রের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সে সংক্রান্তে তথ্যাদি এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র।
পাথর লুটপাটের ঘটনায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) থেকে যে সকল মামলা দায়ের করা হয়েছে, উক্ত মামলার এজাহারের সত্যায়িত কপি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নাম এবং যে সকল ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের নাম ও ঠিকানাসহ তালিকা।
খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২ এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা, ২০১২ এর সত্যায়িত ফটোকপি। এছাড়াও অনুসন্ধানের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্রাদি।
অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কি ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তার বিবরণসহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের নামসহ বিস্তারিত তথ্য এবং পাথর উত্তোলণের বিরুদ্ধে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দায়ীরা শনাক্ত হয়ে থাকলে তার বিবরণ ইত্যাদি।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর সাদাপাথর লুটপাটের সঙ্গে রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দেয় দুদক। উপপরিচালক রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছে।
এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, অভিযানে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অনুসন্ধান পর্যায়ে অপরাধের মাত্রা ও সংশ্লিষ্টতার ধরন বিবেচনায় পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে প্রায় ১৫ একর এলাকাজুড়ে সাদা পাথর নামে একটি পর্যটনকেন্দ্র অবস্থিত। পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি না থাকলেও গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে, বিশেষ করে বিগত কয়েক মাস ধরে সেখানে নির্বিচারে পাথর উত্তোলন হয়েছে।
এসএম/এমএসএম