জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতার বিরুদ্ধে পর্দা ও নারীদের নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে করা মানববন্ধনে ছাত্রী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতির অভিযোগ তুলেছে শাখা ছাত্রদল। মানববন্ধনে আনা অভিযোগ বিভ্রান্তিকর, অপপ্রচার এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষার্থীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা বলে দাবি শাখার নেতাকর্মীদের।
রোববার (১০ আগস্ট) সংগঠনটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এবং সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিভ্রান্তিকর তথ্য, অপপ্রচার এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষার্থীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞান ও মুক্তচিন্তার ক্ষেত্র, এখানে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা সংগঠিত বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টাকে আমরা কঠোরভাবে নিন্দা জানাই। একজন ছাত্রের সঙ্গে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে ধর্ম ও পর্দায় আনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একজনকে বলতে শোনা যায়- এখানে ছাত্রী সংস্থার সদস্যরাও উপস্থিত আছেন। ছাত্রদলের বিপক্ষে যে কোনো সংগঠন, ব্যক্তির পক্ষ থেকে অভিযোগ এলে ছাত্রদল সেটিকে আমলে নিয়ে তদন্ত করে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সদস্যরা তাদের পরিচয় গোপন করে ছাত্রদলের বিপক্ষে হীন উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
সাধারণ শিক্ষার্থী শব্দবন্ধকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলা হয়, এখানে পরিচয় বিকৃতি, বিভ্রান্তিকর প্রচারণা এবং একটি গোষ্ঠীর কর্মসূচি চাপিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থী সমাজকে বিভক্ত করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে এবং সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।
এর আগে, রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় ইসলামের ফরজ বিধান ‘পর্দা’ ও নারীদের নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের কটূক্তির প্রতিবাদ ও প্রকাশ্যে ক্ষমার দাবিতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে’ মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা।
সার্বিক বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ইসলামি বিধান, ধর্ম এবং নারীর ব্যাপারে আমি সদা শ্রদ্ধাশীল। ব্যক্তি কমেন্ট ও ঢাবি ভিসির সমালোচনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত। এ জাতীয় মব তৈরির চেষ্টা রাজনৈতিক এবং একটি গোষ্ঠীর প্রচারণা।
প্রসঙ্গত, শনিবার ( ৯ আগস্ট) শামসুল আরেফিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) উপাচার্যের সঙ্গে শাখা ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সদস্যদের সাক্ষাতের ছবি শেয়ার দেন। একই পোস্টে মন্তব্যের উত্তরের প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনার ঝড় ওঠে।