ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৫, ৬, ৮-এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কলাবাগান থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শিহাব উদ্দিনের পছন্দের গাড়ি নিতে করপোরেশনে পরিবহন ম্যানেজারকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১০ আগস্ট) করপোরেশনের পরিবহন দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে।
করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর মশকনিধন কর্মী রাফি আহমেদ সৈকত, অঞ্চল-২ এর মশকনিধন কর্মী আরিফুল ইসলাম পাভেলসহ ৮-১০ জন মশকনিধন কর্মী পরিবহন ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্শেদের সঙ্গে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ ঘটনায় কর্মকর্তা আর সেবাগ্রহীতাদের নিরাপত্তার বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই পক্ষেরই দায় আছে। সোমবার (১১ আগস্ট) দুপক্ষকে ডেকে ঘটনাটি মিটমাট করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি শুধু গাড়িকেন্দ্রিক নয় বলে মনে হচ্ছে। ভবিষ্যতে যেন করপোরেশনে আর বিশৃঙ্খলার ঘটনা না ঘটে তাই উভয় পক্ষকে আবার ডেকে বসা হবে।’
ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত জানুয়ারিতে অঞ্চল-৫, ৬, ৮-এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কলাবাগান থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শিহাব উদ্দিনের ব্যবহৃত গাড়িটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসময় শিহাবকে আরেকটি গাড়ি বরাদ্দ দেয় করপোরেশনের পরিবহন বিভাগ। এতেই চটে যান ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন। বেশ কয়েকবার আগের গাড়ি ফেরত পেতে পরিবহন দপ্তরে তাড়া দেন তিনি। সর্বশেষ রোববার তার দপ্তরে কর্মরত মশক কর্মীদের দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থাপককে শাসানোর জন্য পাঠান। পরিবহন ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্শেদ মহাব্যবস্থাপক আর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ফের বিষয়টি অফিস আদেশের মাধ্যমে সমাধানের জন্য বললে মশক কর্মীরা চটে যান। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করে পরিবহন ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে জোর করে গাড়ির চাবি পরিবর্তন করে নেন।
পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তার গাড়িটি পুরোনো। তিনি নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এজন্যই করপোরেশন তুলনামূলক ভালো গাড়িটি তাকে দিয়েছে।
এই বিষয়ে পরিবহন ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
জানতে চাইলে ডিএসসিসির অঞ্চল-৫ এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘সিটি করপোরেশনে পরিবহন বিভাগে কী ঘটেছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই। বাস্তবে কোনো কিছুই আমি জানি না।’
গাড়ি নিয়ে কী ঘটেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার গাড়ি নিয়ে কিছুই হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক আছে।’
শিহাব উদ্দিনের গাড়ির চালক বলেন, ‘রোববার করপোরেশনের পরিবহন অফিস থেকে টেলিফোনে দ্রুত অফিসে আসতে বলা হয়। আমি আসার আগেই সেখানে গণ্ডগোল শেষ হয়ে যায়। তখন পরিবহন অফিস থেকে শিহাব স্যারের আগের গাড়ির চাবি আমাকে দেওয়া হয়। সোমবার প্রধান নির্বাহীর কক্ষে এই বিষয়ে আবার সবাইকে ডাকা হয়। সেখানে অফিস আদেশ অনুযায়ী যার যার গাড়ি সে ব্যবহার করবেন বলে সিদ্ধান্ত হলে, আবার গাড়ি পরিবর্তন হয়েছে।’
এই বিষয়ে করপোরেশনের মশকনিধন কর্মী রাফি আহমেদ সৈকত আর আরিফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।